সুন্দরবনের নদী ও খালে অবাধে কাঁকড়া নিধন চলছে।

বিধান চন্দ্র ঘোষ দাকোপ (খুলনা) প্রতিনিধি :  নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী-খালে অবাধে ডিমওয়ালা মা কাঁকড়া নিধন চলছে। বনবিভাগের কতিপয় দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারী আর্থিক চুক্তির বিনিময় এ কাজে জেলেদের সহযোগতিা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অভিযানে এ পর্যন্ত ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার কাঁকড়া জব্দ এবং ১০ জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারী ও ফেব্র“য়ারী মাস অন্যতম মৎস্য সম্পদ মা কাঁকড়ার প্রধান প্রজনন মৌসুম। এ মৌসুমে কাঁকড়ার প্রজনন বৃদ্ধির ল্েয সরকারী ভাবে পৃর্থিবীর বৃহৎ ম্যানগ্রোভবন সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরার পাশ পারমিট বন্ধ রাখার নির্দেশনা রয়েছে। সারা বছরের মধ্যে এই দু‘মাসে মেদী-মায়া কাঁকড়া কোটি কোটি বাচ্চা ছাড়ে এবং সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকার হাজারো জেলে এই কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। এছাড়া কাঁকড়া বিদেশে রপ্তানি করে ব্যবসায়ীরাও বছরে কোটি কোটি টাকার বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করে। কিন্তু বনবিভাগের কতিপয় দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সাথে আর্থিক চুক্তির বিনিময় ম্যানেজ করে সুন্দরবন পূর্ব ও পশ্চিম বনবিভাগের বিভিন্ন স্টেশনধীন নদী-খালে অধিক লাভের আশায় স্বার্থনেষী শত শত জেলে মাছ ধরার পাশ পারমিট নিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মন মা কাঁকড়া আহরন করে প্রজনন বৃদ্ধিতে ব্যাপক তি সাধন করছে। এসব কাঁকড়া আবার প্রকাশ্যে বিভিন্ন বাজারের ডিপোতে বিক্রি করছে জেলেরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলের সাথে আলাপ কালে তারা জানান ওই সব স্টেশন কর্মকর্তারা জেলে নৌকা প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা আর টহল ফাঁড়ি কর্মকর্তা, কর্মচারীরা এক থেকে দেড় হাজার টাকা হারে উৎকোচ নিয়ে এ কাজে সহযোগীতা করছে। তাছাড়া অতিরিক্ত টাকা না দিলে কর্মকর্তারা পাশ দেয় না। আবার অনেক সময় টাকা না দিলে গালিগালাজ করে এবং কাঁকড়া বিক্রি করে টাকা দিতে বলে। ফলে প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরা পাশ পারমিট বন্ধ রাখার নির্দেশনা শুধু কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ থাকছে। ইতি মধ্যে সুন্দরবন থেকে জেলেদের পাঠানো কয়েকটি কাঁকড়ার চালানসহ কয়েক জন জেলেকে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে কোষ্টগার্ড সদস্যরা জেল হাজতে প্রেরণ করলেও কিছুতেই বন্দো হচ্ছে না কাঁকড়া আহরণ। এভাবে প্রজনন কালিন কাঁকড়া ধরতে থাকলে চিংড়ির চেয়েও অর্থনৈতিক কারনে উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় এ সম্পদ অচিরেই বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকার সচেতন মহল। কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশ কর্মকর্তা লেঃ এম এইচ আই সিদ্দিক বলেন প্রজনন মৌসুমে এপর্যন্ত আমরা ১৯টি সফল অভিযান পরিচালনা করেছি। অভিযানে মোট ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি কাঁকড়া জব্দ করেছি যার দাম আনুঃ ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে কিছু কাঁকড়া মারা গেছে বাকি গুলো বনবিভাগের লোকজন সাথে নিয়ে নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছে। তাছাড়া এর সাথে জড়িত ১০ জনকে আটক করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়ে মোংলা থানায় হস্তান্তর করা হয়। এবিষয়ে পূর্ব বনবিভাগের ডিএফও মোঃ মাহমুদুল হাসান‘র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাদের কার্যক্রম চলছে এবং এবিষয়ে আমাদের স্মাট টিমও কাজ করছে। ইতি মধ্যে আমরা ১৮০ মন কাঁকড়া জব্দ করে অবমুক্ত বরেছি। জঙ্গল থাকলে এসব একটু হয়। আর যে সব কর্মকর্তারা টাকা নিয়ে এ কাজে সহযোগীতা করছে তাদের বিরুদ্ধে সঠিক প্রমান পেলে ব্যবস্থা নেযা হবে। উল্টে এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন আপনারাও তো সাংবাদিক। আপনাদের অনেক ভূমিকা আছে, তাদের একটু বুঝান।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ