নাটোরে ভুল চিকিৎসার বলি হতে চলেছেন মিলন !

নাটোর প্রতিনিধি : নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর ভুল চিকিৎসার ফলে বিভিন্ন হাসপাতালে দৌড়াতে দৌড়াতে ও তার ব্যয়ভার বহন করে দিশেহারা কৃষক মিলন ও তার পরিবার। শুধু তাই নয়, মিলন এখন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ১৩নং ওয়ার্ডে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার বেলা ১১টায় নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের চান্দাই উত্তর পাড়া এলাকায় মানব বন্ধন ও বিােভ মিছিল করেছে বিুব্ধ এলাকাবাসী। মানব বন্ধনে এলাকাবাসী মিলনের ভুল চিকিৎসা করায় পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতাল অনতিবিলম্বে বন্ধের দাবি সহ হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান। মিলন প্রামানিক (২৫) বড়াইগ্রাম উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের চান্দাই গ্রামের আকবর প্রামানিকের ছেলে। আকবর ও তার ছেলে মিলনের সংসার চলে অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে। জানা যায়, মিলনের পেটে অস্বাভাবিক ব্যথার কারণে তাকে গত বছরের ১৫ আগস্ট বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেখানে তাকে মোট (৯) নয় রকম টেস্ট (পরীা নিরীা) করে তার হার্নিয়া রোগ হয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত ডাক্তার। ১৬ আগস্ট রাত দুইটায় বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালের স্বত্বাধিকার ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী ও ডা. মাহবুবুর রহমান অপারেশন করেন মিলনের। তার পরদিন থেকে মিলনের অবস্থা আরো অবনতি হতে থাকে, পেটের ব্যথা আরো বাড়তে থাকে। ১৯ তারিখ পর্যন্ত পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরেও কোনো উন্নতি না হলে মিলনকে রাজশাহী নিতে বলে পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপ। ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে সর্বমোট প্রায় ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা খরচ হয়। পরে ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রাজশাহীতে মিলনকে ভর্তি করলে সেখানে টেস্ট (পরীা নিরীা) করে জানা যায় মিলনের পেটের নাড়িতে প্যাঁচ লেগেছে ও পিত্তি থলেতে পাথর হয়েছে এবং হার্নিয়া অপারেশন যে রগে হয়েছে সে রগ না কেটে অন্য রগ কাটা হয়েছে। এর পর বিষয়টির সত্যতা জানার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেও কর্তব্যরত চিকিৎসক একই কথা বলেন। মিলনের বাবা আকবর প্রামানিক জানান, বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ধার ও সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে আমরা ৭০,০০০ (সত্তর হাজার) টাকা সংগ্রহ করেছিলাম তা শেষ হয়ে গেছে। এখন আর চিকিৎসা না করাতে পেরে আমার ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আসি। টাকা না থাকায় কয়েক মাস মিলন চিকিৎসা ছাড়া বাড়িতে পরে থাকে। মিলনের খাবার ও ওষুধ কেনার টাকা পর্যন্ত এখন আমাদের কাছে নেই। এখনো হাট বাজারের দোকান ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাত পেতে সাহায্য নিয়ে আমাদের পরিবারের দিন যাচ্ছে। সরজমিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৩নং ওয়ার্ডে গেলে মিলনের মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর ভুল চিকিৎসা করার কারণে আজ আমার ছেলে মৃত্যুর পথে। টাকা ও মতার দাপট থাকার কারণে ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর এতো বড় একটা ভুলের সংবাদ মিডিয়াতে প্রচার হচ্ছে না। আমি কি আমার সন্তানের ভুল চিকিৎসার বিচার পাবো না? আমার ছেলের বিচার কেউ না করলেও আল্লাহ তো আছেন, তিনিই বিচার করবেন। মিলন কে বাঁচাতে তার অসহায় পরিবার স্থানীয় প্রশাসন, সংসদ সদস্য, চেয়ারম্যানসহ বৃত্তবান লোকদের কাছে সহায়তা এবং এই ঘটনার ন্যায্য বিচার দাবি করেন। উল্লেখ্য, অতীতেও বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে বিভিন্ন রোগীর ভুল চিকিৎসা প্রদানের
অভিযোগ রয়েছে পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালের মালিক ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে।#

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ