আইলা পরবর্তী ৭ বছর পর কয়রায় লবনাক্ত জমিতে বোরো ধান চাষ, ফুটেছে কৃষকের মুখে হাসি

কয়রা প্রতিনিধিঃ আইলা পরবর্তী দীর্ঘ ৭ বছর পর কয়রায় লবনাক্ত কৃষি জমিতে শুরু হয়েছে ব্যাপক হারে বোরো ধানের চাষ। তাই অনেকে মাছ চাষ ছেড়ে মেতেছে ধান চাষে। অথচ আইলার ৪/৫ বছরও অধিকাংশ জমিতে কৃষকরা ধানের পরিবর্তে মাছ করেছেন কিন্তু বিগত বছরে উপজেলার অনেক এলাকায় আমন শেষে বোরো ধানের ফসল ভাল হওয়ায় এবার বোরো চাষ কয়েক গুন বেড়েছে। খবর নিয়ে জানা গেছে আইলার লবন পানিতে ২/৩ ছর কৃষকের মাঠ ভরে থাকায় জমিতে লবনাক্ততার কারনে কৃষকরা আমন চাষ করতেও সাহস পায়নি। তাই আইলার দীর্ঘ ৭ বছর পর কৃষকের জমিতে যখন লবনাক্ততা কমেছে, তখন শুরু হয়েছে ব্যাপক হারে আমনের পাশাপাশি বোরো ধানের চাষ। এছাড়া উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ও কৃষকদের বোরো চাষে উদ্বুদ্ধ করায সমগ্র কয়রা উপজেলায় প্রায় ৩৫২৫০ বিঘা জমিতে এবার বোরো ধানের চাষ হয়েছে। যাহা বিগত বছরের তুলনায় ৫০ ভাগ বেশী। উপজেলার মহারাজপুর গ্রামের আবাদের বিলে আইলা পরবর্তী ২০১৩/১৪ সালে যেখানে আমন চাষ রোপন করেও ফসল পায়নি কৃষকরা সেখানে এবার ব্যাপক হারে আমন শেষে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। এলাকার কৃষকরা জানায় কয়রা, মহারাজপুর ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নে বর্তমান মৌসুমে বোরো চাষ বেড়ে যাওয়ার কারণ,বিগত বছরে অনেক পরিক্ষামূলক ভাবে চাষ করে ভাল ফসল হওয়ায় এবার অনেকেই বোরো চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া মাটিতে লবনাক্ততা কমেছে এবং সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় পানির চাহিদা পূরণ হচ্ছে। তারা বলেন, কয়রা, গোবরা, মহারাজপুর, কালনা, জোড়সিং, বেদকাশি, চরামুখা, ৪নং কয়রা সহ অন্যান্য এলাকায় অনেক কৃষক নিজ খরচে, ডীপ স্যালো বসিয়েছেন এবং ৭০০ থেকে ৮০০ ফুট গভীর হতে পানি তুলে বিগত বছওে বোরো ধান চাষ করে লাভের মুখ দেখায় এবার সমগ্র কয়রা উপজেলায় অনেকেই নতুন করে ডীপ স্যালো বসিয়েছেন। উপজেরা কৃষি অফিসার এসএম মিজান মাহমুদ জানান, কয়রার কৃষকরা এবার বোরো চাষে লাভবান হয়, তাহলে আগামীতে অনেকেই লবন পানির চিংড়ী চাষ ছেড়ে জমিতে আমন ও বোরো ধানের চাষ শুরু করবে। তিনি আরও বলেন, বিগত বছওে এ উপজেলায় যেখানে ১৮/১৯ হাজার বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছিল, সেখানে এবার প্রায় ৪০ হাজার বিঘাতে দাড়িয়েছে। এ সম্পার্কে মহারাজপুর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান ঢালী জানান, তিনি ২০১৬/১৭ সালে বোরো ধান চাষ করে ৩৩শতক জমিতে ২০/২২ মন হারে ধান পেয়ে বর্তমান ২০১৮ সালে ১০/১২ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। তিনি বলেন, আমনের চেয়ে দ্বিগুন খরচ হলেও ধানের মূল্য বেশী থাকায় এবার ও লাভের মুখ দেখবেন এমনটা আশা করছেন তিনি। দীর্ঘ ৭/৮ বছর আইলার পর এখন নতুন আশার আলো দেখছে কয়রার কৃষকেরা। চলতি মৌসুমে বোরা ধানচাষ করে লাভের মুখ দেখবেন কৃষক। বুক তার অনেক আশায় ভরা। মুখে পরিতৃপ্তির হাসি।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ