শালিখায় ভেড়ীবাধ দিয়ে খালের মুখ বন্ধ প্রায় একশ একর কৃষি জমি অনাবাদি

মোঃ শহিদুজ্জামান চাঁদ, শালিখা, মাগুরাঃ মাগুরার শালিখা উপজেলার সেওজগাতী এলাকায় অবস্থিত জিয়ালআলী খালটির মুখে সেওজগাতী গ্রামের মৃত রুমানাথ এর পুত্র স্বপন,তপন ও সুজিৎ নামের তিন প্রভাবশালি ব্যাক্তি ভেড়ীবাধ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের সকলপথ বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারনে খালের পূর্ব ও পশ্চিম পাসের প্রায় ১শ একর কৃষি জমি প্রায় সম্পূর্ন অকাজো হতে চলেছে। এব্যাপারে সেওজগাতী গ্রামের শ্রী মিটুল মিত্রসহ আরো অনেকেই জানায়, আমাদের এলাকার এক মাত্র খালটি ভেড়ীবাধ দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা কৃষকরা শীত মৌসুমে আমাদের ফসলি জমিতে পানি দিতে পারছিনা। সনদ মল্লিক নামের এক কৃষক বলেন- আমাদের পিতামহের নিকট থেকে শুনেছি এই খালটির কথা, তবে কত আগে খালটি কাটা হয়েছিল তা কেউ সঠিক করে বলতে পারে না। অতি গুরুত্বপূর্ন এই খালটি সংস্কার না করলে অনেক কৃষক না খেয়ে মরবে। তা ছাড়া পানি অবদ্ধ হওয়ায় আমাদের গ্রামের একমাত্র বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির মাঠেও বর্ষা মৌসুমে পানি উঠে যায়। অন্যদিকে গ্রীষ্ম মৌসুমে অবিরাম বৃষ্টির ফলে জমির পানি নিষ্কাশন হচ্ছেনা। কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের গ্রামের স্বপন ও তার সহোদররা মিলে খালের মুখ ভেড়ীবাধ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারনে প্রায় এক বছর ধরে আমাদের কৃষি জমিতে কোন ফসল হয়না। এ ব্যাপারে সরকারের কৃষি বিভাগ সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আমরা সকল কৃষকরা মিলে অভিযোগ করি। অভিযোগের পর কৃষি বিভাগের লোকজন খাল এলাকায় এসে সরেজমিন পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত খালটির মুখ ভেড়ীবাধ দিয়ে বন্ধ করা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিন পরির্শনকালে এলাকার কুষকরা সাংবাদিকদের জানায়, খালটির খনন অভাবে দিন দিন তার নব্যতা হারিয়ে এখন সমতল জমিতে পরিনত হয়েছে। প্রায় ১০০ বছর যাবৎ সেওজগাতী, দীঘলগ্রাম, ধনেশ্বরগাতী,গোবিন্দপুর,ভাটোয়াইল ও তালখড়িসহ প্রায় ১০টি গ্রামের কৃষকদের কৃষি জমি শীত মৌসুমে খাল থেকে পানি তুলে ফসলি জমিতে দিতাম। অন্যদিকে গ্রীষ্ম মৌসুমে প্রবাল বৃষ্টিতে ফসলি জমির পানি খালটিতে নিস্কাশন হতো। কিন্তু খালটি খনন অভাবে সমতল জমিতে পরিনত হয়েছে। বছরের পর বছর পার হলেও খালটির দিকে কর্তৃপক্ষের কোন প্রকার নজর নেই। তৎকালিন সময় থেকে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে খালটি খনন করা হয়নি বলে এলাকার বৃদ্ধ বয়সি লোকজন জানায়। এদিকে বারাঙ্গার খালটি সেওজগাতীর বিলের মধ্যে দিয়ে তালখড়ি গ্রামের ভিতর দিয়ে ফটকী নদীতে মিশেছে। কিন্তু খালের মুখে ২০ ফুট উচু করে মাটি ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে কারনে শীত মৌসুমেও পানি জমে থাকে। এব্যাপারে উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা শেখ বিপুল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে ঐ এলাকার কৃষকরা অভিযোগ করার পর সরেজমিনে গিয়ে দেখাগোলো এক ব্যক্তি খালের মুখে ভেড়ীবাধ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। যে কারনে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বিঘা জমির পানি নিস্কাশনের সমস্যা রয়েছে। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। এলাকাবাসী পানি উন্নয়ণ বোর্ডসহ সকলের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা করছে।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ