আত্রাই নদীর দু’তীরে এখন সবুজের সমারোহ

রুহুল আমিন,আত্রাই (নওগাঁ) সংবাদদাতা : নওগাঁর আত্রাই নদীর দু’তীরে এখন চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। নদীর তীরের উর্বর পলি মাটিতে বিভিন্ন জাতের সবুজ ফসল বিপ্লবের হাতছানি দিচ্ছে। বিভিন্ন প্রজাতির সবুজ গাছপালার মধ্যে নানা রকম পাখির কলতানে মুখরিত নদীর দুই তীর। নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে চলা আত্রাই নদীর বুক চিরে এক সময় বজরা ও পালতোলা বড় বড় নৌকা চলত। কালের পরিক্রমায় সেই নদী এখন আপন স্বকীয়তা হারিয়ে ঋতুভিত্তিক বিভিন্ন ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। নদীর চারিদিকে তাকালে শুধুই সবুজের সমারোহ। দিনের পর দিন পলি জমে নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় অতি দ্রুতই নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। শুকনো নদীতে চাষ হচ্ছে ধান, গম, ভুট্টা, বাদাম, সরিষা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, মিষ্টি আলু, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি। ীণধারায় বয়ে যাওয়া নদীর দু ধারে এখন কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা সতেজ ফসল বাতাসে দোল খাচ্ছে। সরেজমিনে উপজেলার ভেতর দিয়ে বয়ে চলা আত্রাই নদীর দু’তীরের বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আত্রাই নদী তীরের কৃষকেরা অনেক বছর ধরে নদীর দু’তীরে বিভিন্ন প্রজাতির আবাদ করে আসছে। শুরুতে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকলেও বর্তমানে সব প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। নদীর যে সকল স্থান আগেই শুকিয়ে গেছে সে সকল স্থানে ফসলের চাষ হচ্ছে পুরোদমে। কয়েক বছর আগে নদীতে প্রচুর পরিমানে বালি ছিল কিন্তু এখন পলি পরে কিছু কিছু স্থানে বালি না থাকায় নদীর মাঝে ইরি-বোরোসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হচ্ছে। এ ব্যাপারে আত্রাই উপজেলার রাইপুর গ্রামের কৃষক শ্রীলাল, পিয়ার আলী ও আবেদ আলী বলেন, আমরা আগে নদীর দু’পাশে আবাদ করতাম না কিন্তু বর্তমানে নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় নদীর পানি দিয়ে ধানের চাষ করতাম কিন্তু এখন সম্ভব হচ্ছে না। কারন ধান তোলার আগেই নদীর পানি একেবারে শুকিয়ে যাচ্ছে শেষের দিকে আর পানি পাওয়া যায়না। উপজেলার জাতোপাড়া গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রতি বছরই এই সময়টিতে নদীর দুই তীরে বিভিন্ন আবাদ করে থাকি। বর্তমানে এখন নদীর পানি না থাকায় স্যালো মেশিন দ্বারা ধান চাষ করতে হচ্ছে এতে খরচ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে কয়েক গুন। নদীতে পানি না থাকায় ধানেেতর পানিও খুব তারাতারি শুকিয়ে যায় ফলে জমিতে বেশি পানির সেচ দিতে হয়। কালিকাপুর ইউনিয়নের শলিয়া ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা কেএম মাহাবুব হোসেন জানান, আত্রাই নদীর গভীরতা কমে যাওয়ার ফলে নদী তীরের কৃষকেরা শুকনো নদীতে বিভিন্ন প্রকার ফসল উৎপাদন করে থাকে এবং আমরা কৃষি অফিসরের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে আসছি। প্রতি বছরের ন্যায় এবার ও নদী তীরের ফসলের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন জানান, নদীর চরের জমি খুবই উর্বর তাই ফসল উৎপাদনও বেশি হয়। এ কারণে কৃষকের মাঝে নদীর চরে ফসর ফলানোর আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। কৃষকেরা যাতে ভালো ফসল ফলাতে পারে সে জন্য কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ