কিমের চীন সফর: নজর দক্ষিণ কোরিয়ার

নিউজ ডেস্ক : উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষপর্যায়ের বৈঠকের সম্ভাবনার মধ্যেই চলতি সপ্তাহে কিম জং-উন ‘চীন সফর’ করছেন বলে বেশ কয়েকটি আন্ত্মর্জাতিক গণমাধ্যম দাবি করেছে। সোমবার তিনটি অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘বস্নুমবার্গ’ প্রথম বিদেশ সফরে কিম বেইজিংয়ে অবস্থান করছেন বলে জানায়। খবরটি সত্যি হলে ২০১১ সালে দায়িত্ব নেয়ার পর এবারই প্রথম দেশের বাইরে গেলেন উত্তর কোরিয়ার এই শীর্ষ নেতা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগে কিমের এই সফরের সংবাদকে গুরম্নত্ব দিয়ে দেখছে আন্ত্মর্জাতিক মহল। দক্ষিণ কোরিয়াও এ বিষয়ে ‘গভীর নজর’ রাখার কথা জানিয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দক্ষিণ কোরিয়ার এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘সব সম্ভাবনার পথ খোলা রেখেই প্রেসিডেন্সিয়াল বস্নু হাউস বেইজিংয়ে কী ঘটছে, সেদিকে গভীর নজর রাখছে।’ যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠকের আগে চীনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের উন্নতিকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবেও দেখছেন তিনি। আগামী এপ্রিলের শেষে ও মে মাসে দুই কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ওই বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে বলে এর আগে সিউল ও ওয়াশিংটনের বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে আন্ত্মর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল।

উলেস্নখ্য, এর আগে দ্বিতীয় কিম-জংয়ের সফরের বিষয়টিও তার সফর শেষে নিশ্চিত করেছিল চীন ও উত্তর কোরিয়া। রাশিয়া সফরের সময়ও দ্বিতীয় কিম-জং কঠোর নিরাপত্তায় ব্যক্তিগত ট্রেন ব্যবহার করেছিলেন। কূটনীতিক ও অন্যান্য সূত্র জানায়, নিরাপত্তাজনিত কারণে তিনি বিমান ভ্রমণ করতেন না। তবে তরম্নণ কিম জং-উন সুইজারল্যান্ডে পড়াশোনা করেছেন। আর তিনি বিমান ভ্রমণে ভয় পান না। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এর আগে তার বিমানে করে বিদেশ যাওয়ার ছবি প্রকাশ করেছিল। ২০১১ সালে বাবার মৃতু্যর পর ক্ষমতা গ্রহণ করেন কিম জং উন। তখন থেকেই তার বিদেশ সফরের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে, মঙ্গলবার সকালে রয়টার্সের এক প্রতিনিধি বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন ‘দিয়াওয়ুতাই হাউস’ থেকে একটি গাড়িবহরকে বেরিয়ে উত্তরের পথে যেতে দেখেছেন। চীন সফরে আসা বিভিন্ন দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারাই সাধারণত এই অতিথি ভবনে থাকেন। এদিন সকালে বের হওয়া গাড়িটিতে কারা ছিলেন তা জানা যায়নি। বহরের গন্ত্মব্যও জানা যায়নি।
বেশ কয়েকটি কূটনৈতিক সূত্রও ‘সম্ভবত কিম চীনে অবস্থান করছেন’ বললেও এ ব্যাপারে নিশ্চিত করতে পারেনি। চীনের নেতৃত্বঘনিষ্ঠ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, তাদের ধারণা, কিমের বোন কিম ইয়ো-জং এখন বেইজিংয়ে অবস্থান করছেন। গত মাসে শীতকালীন অলিম্পিকে দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়ংচ্যাং গিয়েছিলেন জং, তার সফরের সূত্র ধরেই পরে দুই কোরিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তাদের আলোচনার পথ খোলে।
বেইজিংয়ের উত্তর কোরিয়া সংশিস্নষ্ট এক সূত্রের বরাত দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ‘নিউসিস’ কিমের বোন জং এবং উত্তরের আলঙ্কারিক রাষ্ট্রপ্রধান কিম ইয়ং ন্যামের চীন সফরের কথা জানিয়েছে। ফেব্রম্নয়ারিতে শীতকালীন অলিম্পিক চলার সময় এই দুজন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের অফিসে গিয়ে তার সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন।

কিছুই জানে না চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং-উনের চীন সফরের গুজব উঠলেও দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, এই সফরের ব্যাপারে তারা অবগত নয়। বস্নুমবার্গের এ সংক্রান্ত্ম প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনিয়ান জানান, বস্নুমবার্গের দাবি করা পরিস্থিতি সম্পর্কে তারা অবগত নন। সে সময় উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে চীনের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ‘ঐতিহ্যগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ’ আখ্যা দেন তিনি।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ