সেই কিশোরীর সন্তানের দায়িত্ব নিল পুলিশ

নিউজ ডেস্ক

গত ২৭ আগস্ট সমকালে সোনালীকে (ছদ্মনাম) নিয়ে খবর প্রকাশ হয়

ধর্ষণে অন্তঃসত্বা হয়ে জর্ডান থেকে ফেরা মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের সোনালী (ছদ্মনাম) ও তার সন্তানের দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ। গত ২৭ আগস্ট সমকালে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর তার পাশে দাঁড়ায় জেলা পুলিশ প্রশাসন। রোববার সোনালী ও তার শিশু কণ্যাকে দেখতে যান মানিকগঞ্জে পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম।

হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে সোনালী দালালের প্ররোচনায় ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর জর্ডান যান। আইনানুযায়ী, অবিবাহিত ও ২৫ বছরের কম বয়েসী নারী গৃহকর্মের কাজে বিদেশ যেতে পারেন না। কিন্তু স্থানীয় দালালরা ১৫ বছর বয়েসী সোনালীর বয়স বাড়িয়ে পাসপোর্ট করে তাকে জর্ডান পাঠায়।

সেখানে ধর্ষণের ফলে অন্তঃসত্বা হয়ে দেশে ফেরা সোনালী গত ২৩ আগস্ট সিঙ্গাইর উপজেলা স্বাস্থ কেন্দ্রে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। অবিবাহিত কিশোরী সোনালী মা হওয়ায় তার পরিবারকে একঘরে করে রেখেছে গ্রামের সমাজপতিরা।

রোববার পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম সোনালীকে আর্থিক সহায়তা ও তার সন্তানকে নতুন জামাকাপড় দেন। পুলিশ সুপার গ্রামবাসীর প্রতি প্রতি আহ্বান জানান, সোনালী ও তার পরিবারের সঙ্গে সবাই যেনো স্বাভাবিক আচরণ করেন। সোনালী কোনো অপরাধ করেনি। সে জঘন্য অপরাধের শিকার হয়েছে। যারা তার পরিণতির জন্য দায়ী সেই দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুলিশ সুপার।

সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর সোনালী বাদি হয়ে গত ২৮ আগস্ট সিঙ্গাইর থানায় মামলা করেছেন। মানব পাচার, নারী ও শিশু নির্যাতন, জোর করে দাসত্ব করানো, আটকে রেখে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের অভিযোগে এ মামলায় সিংগাইর উপজেলার আয়শা আক্তার, জর্ডানে ‘নারী ব্যবসায়ী’ সিংগাইরের চর চান্দর গ্রামের সোনিয়া আক্তার, তার বাবা লিহাজ উদ্দিন বেপারী, মা জরিনা বেগম ও বিদেশি নাগরিক গরজিদকে আসামি করা হয়েছে। লিহাজ উদ্দিন বেপারী ও তার স্ত্রী জরিনা বেগমকে গ্রেফতার কেরছে পুলিশ।

পরিবারের অভাব ঘুচানোর আশায় বছর দুই আগে জর্ডান গিয়ে নরক যন্ত্রণায় পড়ে কিশোরী সোনালী। যে বাসায় সে কাজ পায় সেখানকার মালিক ও তার ছেলে তাকে ধর্ষণ করে। গৃহকর্তার কবল থেকে উদ্ধার পেলেও মুক্তি পায়নি। মামলার এজাহারের তথ্যানুযায়ী, সোনালীকে জর্ডানের রাজধানী দাম্মামের এক পতিতালয়ে আটকে রাখে সোনিয়া। সেখান থেকে পালানোর পর আবারো ধরে নিয়ে যায়। পতিতালয়ে গরজিদ নামের এক ভারতীয় নির্মাণ শ্রমিকের ধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্বা হয়ে পড়লে তাকে পুলিশে দেয় দালালরা। পরে সরকারি সহায়তায় গত ১৫ এপ্রিলে দেশে ফেরে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্বা সোনালী।

পুলিশ সুপারকে কাছে পেয়ে সোনালী ও তার পরিবারের সদস্যরা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে। সোনালী বলে, তাকে ও তার সন্তানকে দেখতে পুলিশ সুপার এসেছিলেন। এবার সে ন্যায় বিচার পাওয়ায়র বিষয়ে আশাবাদী।

সোনালীর রিকশাচালক বাবা ভূমিহীন। তার তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে সোনালী সবার বড়।

editor

Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry. Lorem Ipsum has been the industry's standard dummy text ever since the 1500s, when an unknown printer took a galley of type and scrambled it to make a type specimen book. It has survived not only five centuries