পাকুন্দিয়ায় বিধবাকে ভিটে ছাড়ার পায়তারা
মো.মুঞ্জুরুল হক মুঞ্জু
পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের বাহাদিয়া গ্রামে এক বিধবা বয়োবৃদ্ধ নারীকে জমির রেজিষ্ট্রি না দিয়ে উল্টো ভিটেবাড়ি ছাড়ার পায়তারা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রেজিয়া খাতুন নামে ওই বয়োবৃদ্ধাকে ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে প্রতিপক্ষ প্রায়ই অত্যাচার নির্যাতনসহ বাড়িঘরে হামলা চালানোর ঘটনা ঘটেছে। গ্রাম্য আদালত, আদালতে ও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার না পেয়ে একরকম উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কে জীবনযাপন করতে হচ্ছে ওই বিধবাকে। বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই!
জানা গেছে, উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের বাহাদিয়া মধ্যপাড়া গ্রামের রেজিয়া খাতুন একমাত্র নাতী মেহেদী হাসান অনিক (১৩) কে নিয়ে ক্রয়কৃত জায়গা জমিতে মাটির ঘরে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। বছর খানেক আগে তাঁর স্বামী মুসলেহ উদ্দিন মারা যান। প্রতিবেশীদের দেয়া দানের টাকা-পয়সায় কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছেন ওই বৃদ্ধা ও তার নাতী।
সরেজমিনে ওই এলাকায় গেলে রেজিয়া খাতুন ও বাহাদিয়া এলাকার ইন্নছ আলী, মোমতাজ উদ্দিন, ইমাম উদ্দিন, আব্দুল হেকিম, মুর্শিদ উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন ও হুমায়ুন কবীরসহ কয়েজন মুরব্বি জানান, প্রায় ৪০বছর আগে সম্পর্কে দেবর ইমাম উদ্দিন ওরফে পচা মিয়ার বাড়িতে থেকে মাটি কাটার কাজ করতো রেজিয়া। ওই কাজ করে ৫০হাজার টাকা জমা করে জমিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। অন্য কোথাও জমি না কিনে নিজের জমি রেজিয়াকে দেয়ার প্রস্তাব দেয় দেবর পচা মিয়া। প্রেক্ষিতে বসতবাড়ি থেকে খানিক দূরে পরিত্যক্ত জঙ্গলে ৫০হাজার টাকার বিনিময়ে পচা মিয়ার দেয়া দুই কাঠা জায়গায় মাটির ঘর নির্মাণ করে বসবাস করতে থাকে রেজিয়া দম্পতি। পচা মিয়ার দুই মেয়ে। কোন ছেলে সন্তান নেই। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেলে সম্পত্তি নিয়ে কোন ঝামেলা হবে না। তাই জমির রেজিষ্ট্রি পচা মিয়া দেয়নি, পক্ষান্তরে রেজিয়াও জোর করেনি। কিন্তু মেয়েদের বিয়ে হবার পর দেখা দেয় ঝামেলা। পচা মিয়া বর্তমানে অসুস্থ্য হয়ে শয্যাশায়ী। এদিকে রেজিয়ার জায়গায় চোখ পড়ে পচা মিয়ার ছোট মেয়ের জামাই একই ইউনিয়নের পাশর্^বর্তী গ্রামের শহীদ মিয়ার। উচ্ছৃঙ্খল স্বভাবের শহীদ মিয়া প্রায়ই লোকজন নিয়া রেজিয়ার ওপর অত্যাচার নির্যাতন চালায় এবং বসতঘরে হামলা করে গাছপালা কেটে ফেলে। শহীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে রেজিয়া গ্রাম্য আদালত ও আদালতের শরণান্ন হলেও কোন প্রতিকার মেলেনি। রেজিয়া খাতুন তাঁর একমাত্র নাতী অনিকের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জমির রেজিষ্ট্রি পেতে ও জীবনের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।