কম সময়ে অধিক ফলন দেবে ব্রিধান-৮৭

আশরাফুল ইসলাম
সাধারণত আমন ধান কাটার পর কৃষক রবিশস্য করেন। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, আমন ধান কাটতে কাটতে রবিশস্যের সময় পেরিয়ে যায়। প্রচলিত ব্রিধান-১১ কাটতে ১৪৫ দিন সময় লাগে। কিন্তু এর চেয়ে ১৮ দিন আগে কাটা যাবে ব্রিধান-৮৭, যা ব্রিধান-৪৯ থেকেও ৭ দিন আগাম। ফলে ব্রিধান-৮৭ কাটার পর রবিশস্য ফলানোর প্রয়োজনীয় সময় ও সুযোগ পাওয়া যাবে। সময় কম লাগলেও ব্রিধান-৮৭ এর ফলন হয় বেশি। এছাড়া যেকোন ধানের চেয়ে ব্রিধান-৮৭ এর খড় লম্বা। ব্রিধান-৪৯ এ অনেক সময় ফলস স্মার্ট (এক ধরনের রোগ) দেখা দিলেও ব্রিধান-৮৭ জাতের মধ্যে সেটি নেই। ফলে কৃষক সব দিক থেকে লাভবান হবেন। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর গ্রামের কৃষক মো. খোরশেদ উদ্দিন পরীামূলকভাবে এই ধান আবাদ করেছেন। মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) সকালে সেই জমি পরিদর্শন করতে এসেছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির ও চিফ বায়োটেকনোলজিস্ট মো. এনামুল হক। এ সময় স্থানীয় কৃষকেরা উপস্থিত ছিলেন। কৃষক মো. খোরশেদ উদ্দিন জানান, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সরবরাহ করা ৫ কেজি বীজ দিয়ে তিনি তার ৫২ শতক জমিতে পরীামূলকভাবে ব্রিধান-৮৭ আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হয়েছে। এই জমি থেকে আগে যেখানে ২০-২২ মণ ধান পেতেন, সেখানে এবার ২৭-২৮ মণ ধান পাবেন বলে তিনি আশা করছেন। পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির জানান, ব্রিধান-৮৭ জাতটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বায়োটেকনোলজি বিভাগ উদ্ভাবন করেছে। এই জাতটি বিগত ১৪-১৫ বছর যাবৎ গবেষণা করে এই আমন মৌসুমের আগে অবমুক্ত করা হয়েছে। এই জাতটির বিশেষত্ব হলো, ব্রিধান-১১ এর ব্রিধান-৮৭ এ হেক্টরপ্রতি আধা টন ফলন বেশি হয়। জীবনকালের দিক দিয়ে ব্রিধান-১১ এর চেয়ে ব্রিধান-৮৭ ১৮ দিন আগাম। এছাড়া এর চাল অনেক চিকন। সেই হিসেবে ব্রিধান-৮৭ জাতটিতে ফলন বেশি, আগাম এবং চালের মান ভালো। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, এই জাতটিতে কৃষক খড়ও পাবেন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির ও চিফ বায়োটেকনোলজিস্ট মো. এনামুল হক জানান, নতুন এই জাতটিকে ছড়িয়ে দিতে বেশকিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিএডিসি এবং কৃষকদের এ জাতের বীজ দেয়া ছাড়াও কৃষকরা যেন পার্শ্ববর্তী কৃষকদেও এই বীজ দেন, সে ব্যাপারে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মীদেরকেও উদ্ধুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সবদিক দিয়ে ভাল এই জাতটি যেন দ্রুত কৃষকেরা মাঠে পান এবং কৃষকেরা মাঠে বেশি ফলন পেয়ে লাভবান হন, সেটিই তাদের ল্য বলে মন্তব্য করেন ইনস্টিটিউটের চিফ বায়োটেকনোলজিস্ট মো. এনামুল হক।

editor

Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry. Lorem Ipsum has been the industry's standard dummy text ever since the 1500s, when an unknown printer took a galley of type and scrambled it to make a type specimen book. It has survived not only five centuries