মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই কিন্তু আলোচনায় তুহিন
বিশেষ প্রতিনিধি
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর-হোসেনপুর) আসনে আওয়ামী লীগে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকলেও আলোচনায় রয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেজো ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিন। মর্যাদাপূর্ণ এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের বিষয়টি কেবল স্থানীয় পর্যায়ে নয় জাতীয় পর্যায়েও বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন বিক্রি ও জমা কার্যক্রম মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) শেষ হয়েছে। বুধবার (১৪ নভেম্বর) মনোনয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বার্তা দিয়ে দিয়েছেন মনোনয়ন প্রত্যাশীদের। এ রকম পরিস্থিতিতে কিশোরগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে এখনও। এ আসনের বর্তমান এমপি জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই অসুস্থতার জন্য তিনি জাতীয় সংসদ থেকেও ছুটি নিয়েছেন। এ অবস্থায় অনেকদিন ধরে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছে অনেকেরই নাম। তবে মর্যাদাপূর্ণ এই আসনে প্রার্থী নির্বাচনে চমক থাকতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। আবার দলীয় অনেক নেতাকর্মীরা বলছেন, অসুস্থতার কারণে শারীরিকভাবে অনুপস্থিত থাকলেও কিশোরগঞ্জ-১ আসনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। দলের সাংগঠনিক কর্মকা-, প্রশাসনিক দায়িত্বে দৌড়ঝাঁপ দৃশ্যমান নয় অথচ শুধুমাত্র এই আসনেই নয় দলের ভেতরে ও বাইরে জনপ্রিয়তায় ঈর্ষনীয় এমন রাজনীতিবিদ কোন দলেই সাম্প্রতিককালে দেখা যায়নি। সৈয়দ আশরাফের এই কারিশমার রহস্য কারো জানা নেই। এরপরও দলের ভেতরে এবং বাইরে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নানা কথা চলে আসছে। কোন কারণে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম নির্বাচনে প্রার্থী না হলে, এ আসনে কে ধরবেন নৌকার হাল? এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার অন্ত নেই। তবে মনোনয়ন যার ভাগ্যেই জুটে না কেন, এ আসনে বেশ জোরেসোরেই উচ্চারিত হচ্ছে রাসেল আহমেদ তুহিনের নাম। মাঠের রাজনীতিতে থাকার কারণে দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি আলোচনায় রয়েছেন। বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের জানান দিতে ছুটে গেছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে। নৌকা মার্কার জন্য ভোট প্রার্থনা করেছেন। তাঁর এই তৎপরতা তাঁর সমর্থকদের বেশ আশাবাদী করে তুলেছে। সবমিলিয়ে কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর উপজেলায় রাসেল আহমেদ তুহিন যথেষ্ঠ আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। সাধারণ মানুষের মুখে মুখে এখন তুহিনের নাম শোনা যায়। বিষয়টিকে তুহিন সমর্থকরা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে। তবে দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। জেলার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ সংসদীয় আসন কিশোরগঞ্জ-১। জেলা সদর হওয়ার কারণে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সবদিক থেকেই এ আসনটি গুরুত্বপূর্ণ। সব দলেরই নজর থাকে এ আসনের প্রতি। দলীয়ভাবে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই ও মনোনয়ন এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুধু প্রতীক নয় প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও ভাবমূর্তি এ আসনে জয়ী হওয়ার অন্যতম নিয়ামক শক্তি। সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় তুহিন দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রাম-গঞ্জে জনসংযোগে থেকে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে যাচ্ছেন। ভোটের মাঠে তিনি আলোচিত একজন প্রার্থী। বিগত সংসদ নির্বাচনগুলোর ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই বিপুল ভোটে জয়লাভ করে আসছেন। স্থানীয়ভাবে এটি আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত জেলা হিসেবে পরিচিত। তাই সবার দৃষ্টি এখন কেন্দ্রে। কার ভাগ্যে জুটবে নৌকার মনোনয়ন? এ আলোচনাই চলছে এই আসনের দুই উপজেলার ব্যস্ত শহর থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত জনপদে।