৪৮ বছর পর আলো জ্বলেছে!
স্টাফ রিপোর্টার
অবশেষে ৪৮ বছর পর জ্বললো আলো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তারের উদ্যোগে ২৫শে মার্চ (সোমবার) সন্ধ্যায় নিকলী উপজেলার সর্ববৃহৎ বধ্যভূমি কেন্দ্রীয় শ্মশান ঘাটে প্রথম বারের মতো মোমবাতি প্রজ্জ্বলনসহ নানা আয়োজনে স্মরণ করা হয়েছে ৩৪ শহীদকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিকলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন ভূঁইয়া, পরিদর্শক (তদন্ত) সামছুল আলম সিদ্দিকী, বাসদ নেতা সাজেদুল হক সেলিম, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির নিকলী উপজেলা সভাপতি সঞ্জয় সাহা, উপজেলা মাধ্যমিক শিা অফিসার নূরুজ্জামান হাবীব, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান প্রমূখ। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর (বাংলা সালের ৬ আশি^ন) উপজেলার দামপাড়া ইউনিয়নের মিস্ত্রি পাড়ার ৩৯জনকে নিরাপত্ত্বা কার্ড দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কয়েক রাজাকারের তত্ত্বাবধানে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজাকার ক্যাম্প নিকলী থানায়। তাদের মধ্যে বাদল সূত্রধর, বাদল বর্মন, সুনু বর্মন, গোপাল সূত্রধর বয়সে কিশোর হওয়ায় রাখা হয় থানা লকআপে। বাকিদের পিঠমোড়া বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে চালানো হয় নির্যাতন। ণে ণে লাঠি আর বেয়নেটের খোঁচাখুঁচি চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ওই ৩৫ গ্রামবাসীকে থানার নিকটস্থ সোয়াইজনী নদীর পশ্চিমপাড়ের শ্মশানখলা ঘাটে সাঁরিবদ্ধ দাঁড় করিয়ে চালানো হয় ব্রাস ফায়ার। রাজাকারদের সহযোগিতায় গুলিবিদ্ধ ৩৫ জনকেই হলুই (মাছ গাঁথার বড় সুঁই ) করে নিয়ে যাওয়া হয় ধুবলারচর নামক হাওরে। মৃত্যু নিশ্চিৎ করতে বর্ষার পানিতে ডুবিয়ে দেয়া হয় সবাইকে। কামিনী বর্মন নামে একজন কাকতালীয়ভাবে বেঁচে যান। ভোর বেলায় ছেড়ে দেয়া হয় থানা লকআপের চার কিশোরকে। ততণে হাওরের জলে ভেসে গেছে তাদের মা-কাকীর সিঁদুর। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, সুদীর্ঘ সময়ে বধ্যভূমিটিতে শহীদ বেদি হয়নি এটি দুঃখজনক। শীঘ্রই শহীদ বেদি নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।