শীঘ্রই নিলামে উঠছে ১২টি প্লেন, দাম না পেলে বেচা হবে কেজি দরে

বাংলাদেশে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ১২টি প্লেন শীঘ্রই নিলামে তোলা হবে।

এই বিমানগুলো দেশের বন্ধ হয়ে যাওয়া কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার উড়োজাহাজ।

কর্তৃপক্ষের কাছে দীর্ঘদিন যাবত বিমানবন্দরের পার্কিং ফি সহ নানারকম বকেয়া রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর।

কর্তৃপক্ষ বলছে, শীঘ্রই এই নিলাম অনুষ্ঠিত হবে।

তবে সেখানে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে কেজি দরে বিক্রি করে দেয়া হবে প্লেনগুলো।

কেন নিলামে উঠছে বিমান?

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম তৌহিদুল আহসান বলেছেন, এই মূহুর্তে মোট ১২টি এয়ারক্রাফট বিমানবন্দরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।

এর মধ্যে ১০টি বিমান গত আট বছর ধরে কার্গো-ভিলেজের জায়গা দখল করে আছে।

তিনি বলেছেন, “এই বিমানগুলোর রেজিস্ট্রেশন আগেই বাতিল করেছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দর থেকে তাদের উড়োজাহাজ সরিয়ে নেয়ার জন্য নোটিশও দেয়া হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু তারা নিজেদের বিমান সরায়নি বা জবাবও দেয়নি।”

“তাদের কাছে পাওনা অর্থও তারা পরিশোধ করেনি বারবার তাগাদা দেয়া সত্ত্বেও। যে কারণে এখন বাধ্য হয়েই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে আমাদের।”

এখন সিভিল এভিয়েশন আইন অনুযায়ী পরিত্যক্ত বিমানগুলো বাজেয়াপ্ত করে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিলাম আয়োজন করা হবে।

কেবল বকেয়া আদায় নয়, বিমান বন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ চলছে।

তার জন্যেও কার্গোর ওই জায়গাটি খালি করা দরকার বিমানবন্দরের।

সে কারণেই কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিলাম আয়োজন করা হবে।

এবং কাঙ্ক্ষিত দাম না পেলে কেজি দরে বিক্রি করে দেয়া হবে প্লেনগুলো।

কী বিমান নিলামে উঠছে?

এই মূহুর্তে যেসব বিমান পড়ে আছে তার মধ্যে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের আটটি, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের দুইটি, জিএমজি এয়ারলাইন্স ও এভিয়েনা এয়ারলাইন্সের একটি করে প্লেন পড়ে আছে।

এই ১২টি প্লেনের পার্কিং চার্জ ও সারচার্জ বাবদ প্রায় ৮০০ কোটি টাকার মতো বকেয়া রয়েছে।

এর মধ্যে সর্বোচ্চ বকেয়া জিএমজি এয়ারলাইন্সের কাছে। এই প্রতিষ্ঠানের কাছে ৩৬০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের।

২০১২ সালে জিএমজি এয়ারলাইন্স তাদের আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট স্থগিত করে। এরপর আর কখনো ওড়েনি এই সংস্থার বিমান।

রিজেন্ট এয়ারওয়েজের কাছ থেকে বকেয়ার পরিমাণ ২০০ কোটি টাকা।

২০২০ সালের মার্চে বন্ধ হয়ে যায় রিজেন্ট, কিন্তু তার আগেই বেশ কয়েকটি রুটে বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল সংস্থাটি।

এর বাইরে পার্কিং চার্জ ও সারচার্জ বাবদ কর্তৃপক্ষের কাছে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের বকেয়া ১৯০ কোটি টাকা।

দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত একমাত্র বিমান কোম্পানি ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ বন্ধ রয়েছে ২০১৬ সাল থেকে।

এখন এই বকেয়া টাকা আদায়ের জন্যে কর্তৃপক্ষ বিমান নিলামে তুলছে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এসএম তৌহিদুল আহসান বলেছেন, ইতোমধ্যে নিলামের প্রক্রিয়া নির্ধারণে কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং নিলামের কর্মপদ্ধতি ও সুপারিশমালাও চূড়ান্ত হয়েছে।