লার্ভার ছবি দিলে পুরস্কার, লার্ভা থাকলে তিরস্কার: মেয়র আতিক

৭২০ জন স্বেচ্ছাসেবক মাঠে কাজ করছেন। এঁদের মধ্যে যে স্বেচ্ছাসেবক সবচেয়ে বেশি লার্ভাস্থলের ছবি তুলে করপোরেশনকে জানাতে পারবে, তাঁকে পুরস্কৃত করা হবে। আর যাঁদের বাসাবাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাবে, তাঁদের তিরস্কার করা হবে—এমন ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।

আজ বুধবার ডিএনসিসি অঞ্চল-৫–এর ৩১ নম্বর ওয়ার্ড মোহাম্মদপুর এলাকায় এডিস মশা নিধনে জনসচেতনতা সৃষ্টির প্রচারে এসে তিনি এ ঘোষণা দেন।

মেয়র বলেন, উত্তরের ৫৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে যে ওয়ার্ডে সবচেয়ে কম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হবে বা পাওয়া যাবে, সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে পুরস্কার দেওয়া হবে।

সবাইকে নিজেদের বাসাবাড়ি, অফিস, নির্মাণাধীন ভবন পরিষ্কার রাখার অনুরোধ জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আসুন, সবাই প্রত্যেক সপ্তাহের শনিবার দিন সকাল ১০টা ১০ মিনিটের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করি। কোথাও পানি জমার সুযোগ আছে কি না—তা খুঁজে দেখি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের বাসাবাড়িতে যেসব অপ্রয়োজনীয় জিনিসে পানি জমে থাকছে বা জমা হওয়ার সুযোগ আছে, সেগুলো বাড়ির নিচে নামিয়ে রাখুন। করপোরেশনের কর্মীরা তা পরিষ্কার করবেন।’

ডিএনসিসির ৪২টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আপনারা হয়তো জানেন না যে আপনাদের ঘরে বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা পানিতেই এডিস মশা ডিম পাড়ছে, বংশবিস্তার করছে। তাই করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও রাস্তায় নেমেছি। আসুন, আমরা সবাই মিলে ভালো থাকি।’ এই শহর শুধু মেয়র, কাউন্সিলর কিংবা এই শহর শুধু মশার নয়, এই শহর সবার বলেও তিনি মনে করিয়ে দেন।

সচেতনতা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে অভিনেতা মোশাররফ করিম বলেন, ‘গা ছাড়া নয়, আসুন, গা ঝাড়া দিই। আপনার আমার, আমাদের সবার নিরাপত্তার জন্য একজন আরেকজনকে উদ্বুদ্ধ করি, সচেতন করি। যেখানেই পানি জমে কিংবা জমতে পারে, তা পরিষ্কার রাখি।’ সবার স্লোগান হোক “তিন দিনে এক দিন জমা পানি ফেলে দিন”।’

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেও সবাইকে সচেতন করতেই বাইরে বের হয়েছি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শহরটা মেয়রের একার নয়, এই শহর আমাদের সবার। তবে “আমাদের” কথাটি সব সময় আমরা অনুভব করতে পারি না। শুধু “আমি ও আমার” শব্দের মধ্যে পড়ে থাকি। এই ‘আমার’ মধ্যে যখন নিজেকে সীমাবদ্ধ করে ফেলি, তখন এই দেশকে ভুলে যাই, দেশের প্রতি ভালোবাসার কথা মনে থাকে না বা ভেতরে আস্তে আস্তে মরে যায়। এই আমি থেকে আমরা হতে চাই, সবাই একসঙ্গে কাজ করে ভালো থাকতে।’

করোনার বিধিনিষেধ থাকলেও মেয়র আতিকুল ইসলাম, অভিনেতা মোশাররফ করিমসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে খোলা ট্রাকে চড়ে সচেতনতা শোভাযাত্রায় অংশ নেন। জনসচেতনতা বাড়াতে এডিস মশা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াবিরোধী বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে ট্রাকটি সাজানো হয়। শোভাযাত্রাটি মোহাম্মদপুরের তাঁজমহল রোডের ঈদগাহ মাঠ থেকে শুরু হয়ে, শিয়া মসজিদ, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড, টাউন হল দিয়ে আসাদগেট থেকে আবার ঈদগাহ মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পথে কয়েকটি জায়গায় ট্রাক থামিয়ে পথসভা করে স্থানীয় লোকজনকে এডিস মশা নিধনে করণীয় সম্পর্কে সচেতন করেন মেয়র।

Source: Prothomalo