অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়
দুই ম্যাচ বাকী রেখেই সিরিজ বাংলাদেশের
চতুর্থ বলে ফুলটসে একটা নো করেছিলেন মেহেদী হাসান। তবে তাতে কিছু যায় আসেনি শেষ পর্যন্ত। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়াকে ১০ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো তাঁদের বিপক্ষে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ, সেটিও দুই ম্যাচ বাকী রেখেই!
মোস্তাফিজ : ১৯তম ওভার, ১ রান!
২ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৩ রান। ১৯তম ওভারে মোস্তাফিজ দিলেন মাত্র এক রান! তবে শেষ ওভারে মেহেদী হাসান বা সৌম্য সরকারের একজন অথবা নতুন একজন বোলারকে আনতে হবে মাহমুদউল্লাহর।
বাধা হয়ে থাকা মার্শকে ফেরালেন শরীফুল
এ উইকেটটাই খুঁজছিল বাংলাদেশ। রান-বলের ব্যবধান বাড়ার চাপ কমাতে শট খেলতে হল মিচেল মার্শকে, ক্রিজ ছেড়ে বেড়িয়ে এসে তুলে মেরেছিলেন। লং-অফ থেকে ছুটে এসে ভালো ক্যাচ নিয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম। ৫১ রানে ফিরলেন মার্শ। নিশ্চিতভাবেই ম্যাচে এখন এগিয়ে বাংলাদেশ।
মার্শের ফিফটি
কন্ডিশন সহজ নয়, সিরিজ ঝুলছে সুতোর ওপর। মিচেল মার্শ নামলেন ৮ রানে প্রথম উইকেট যাওয়ার পর। ৪৫ বলে ফিফটিও হয়ে গেল তাঁর। বেন ম্যাকডারমটের সঙ্গে জুটিতে অস্ট্রেলিয়াকে উদ্ধার করেছেন, এখনও বাংলাদেশ ও জয়ের মাঝে সবচেয়ে বড় ব্যবধান তিনিই।
শেষ ২১ বলে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ৩৬ রান।
দুই ওভারে দুই উইকেট
সাকিবের পর উইকেট পেলেন শরীফুলও। ফ্লিক করতে গিয়ে গড়বড় হয়ে গিয়েছিল ময়েজেস হেনরিকেসের। মিড-অনে সহজ ক্যাচ নিতে ভুল করেননি শামীম হোসেন। আরেকদফা চাপ বাড়ল অস্ট্রেলিয়ার ওপর। ৩০ বলে এখন ৪৮ রান প্রয়োজন অস্ট্রেলিয়ার। ৪০ রানে অপরাজিত মার্শ।
ব্রেক থ্রু দিলেন সাকিব
শুধু বাংলাদেশকে লড়াইয়ে ফেরালেন না, শরীফুলকেও যেন মুক্তি দিলেন সাকিব। নিজের শেষ ওভার করতে এসে ব্রেক থ্রু দিলেন তিনি বেন ম্যাকডারমটকে ফিরিয়ে। ফুললেংথের বলে স্লগ করতে গিয়েছিলেন, তবে আন্ডার-এজড হয়ে বোল্ড হয়েছেন। ৩২ রানে জীবন পাওয়া ম্যাকডারমট ফিরলেন ৩৫ রান করে, মিচেল মার্শের সঙ্গে তাঁর ৬৩ রানের জুটিও ভাঙল।
সুযোগ হাতছাড়া শরীফুলের
হয়তো এ ব্রেকথ্রুটাই দরকার ছিল বাংলাদেশের। তবে সহজতম একটা ক্যাচ ছাড়লেন শরীফুল ইসলাম।
মোস্তাফিজুর রহমানের লেগস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন বেন ম্যাকডারমট, ডিপ স্কয়ার লেগে শরীফুলের কাছে গিয়েছিল ক্যাচ। তবে রাখতে পারেননি সেটি। ৩২ রান জীবন পেলেন ম্যাকডারমট।
ম্যাচ বদলে দেওয়া মুহুর্ত?
নুরুল, আইড্রপ এবং কন্টাক্ট লেন্স?
ব্যাটিংয়ের সময়, পরে উইকেটকিপিংয়ের সময়ও চোখে ড্রপ ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছিল নুরুল হাসানকে। এবার কিছু একটা পরলেন চোখে। দেখে মনে হচ্ছিল কন্টাক্ট লেন্সই।
ব্যাটিংয়ে প্রথম দফা চোখে ড্রপ দেওয়ার পরই একটা ছয় মেরেছিলেন। উইকেটকিপিংয়ে এখন পর্যন্ত অবশ্য কোনো উইকেটে সরাসরি অবদান রাখেননি নুরুল।
হঠাৎ উত্তাপ
হঠাৎ করেই একদফা উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়ে গেল মাহমুদউল্লাহ ও মিচেল মার্শের।
শরীফুল ইসলামের শর্ট বলটা আড়াআড়ি খেলতে যাওয়া মার্শ কিছু একটা বলেছিলেন শরীফুলকে। এর জবাবই দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। পরে আম্পায়ার এসে শান্ত করেছেন পরিস্থিতি।
১০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৫৪, ফলে শেষ ৬০ বলে প্রয়োজন ৭৪ রান।
চাপ সামলানোর চেষ্টা মার্শের
পাওয়ার প্লের ঠিক পরের ওভারেই নাসুমকে ছয়-চার মেরেছেন মিচেল মার্শ। শেষ তিন ওভারে উঠেছে ১৬ রান। আরেক দফা বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাধা এখন মার্শ, বেন ম্যাকডারমট ধীরগতির হলেও সঙ্গ দিচ্ছেন তাঁকে।
৬ ওভারে ২০
বাংলাদেশ তুলেছিল ২৮ রান। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ওভারে ৮ রান তুললেও প্রথম ৬ ওভারে তুলল ২০ রান। নাসুম আহমেদ ও সাকিব আল হাসানের পর মোস্তাফিজুর রহমান চেপে ধরেছেন সফরকারীদের।
শরফউদ্দৌলার অদ্ভুত সিদ্ধান্ত
সাকিবের টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বলটা টেনে মারতে গিয়ে মিস করেছিলেন মিচেল মার্শ। সেটা ধরে স্টাম্প ভেঙেছিলেন উইকেটকিপার নুরুল হাসান। তবে তেমন আবেদনও ছিল না বাংলাদেশের। এরপর শেষ মুহুর্তে গিয়ে হঠাৎ করেই আঙুল তুলে বসলেন আম্পায়ার শরফউদ্দৌলা। মার্শ অবশ্য রিভিউ করলেন সঙ্গে সঙ্গেই। আল্ট্রা-এজেও দেখা যায়নি কোনো স্পাইক।
ওয়েড এবং লেগসাইডের বল : অধ্যায় তিন
আগের দুই ম্যাচে মিডল অর্ডারে খেলেছিলেন, তবে আজ ওপেনিংয়ে উঠে এলেন অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। তবে আগের দুই ম্যাচের মতো লেগসাইডের বল এবারও কাল হলো তাঁর।
নাসুম আহমেদের লেগসাইডের বলটা টেনে মারতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ধরা পড়েছেন ওয়েড, ৫ বলে ১ রান করেই। প্রথম ম্যাচে লেগসাইডের বেশ বাইরের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন ওয়েড। পরের ম্যাচে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে মোস্তাফিজের বলে হারিয়েছিলেন লেগস্টাম্প।
প্রথম ওভারে মেহেদী হাসানকে বেন ম্যাকডারমট ছয় মারলেও পরের ওভারে নাসুম দিয়েছেন ব্রেক থ্রু। রানতাড়ায় আবারও শুরুতেই উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
অভিষেকেই হ্যাটট্রিক এলিসের!
স্কোয়াডে ছিলেন রিজার্ভ হিসেবে। রাইলি মেরেডিথের চোটে মূল দলে এলেন। আজ অভিষেক হয়ে গেল নাথান এলিসের। অভিষেকে পেয়ে গেলেন হ্যাটট্রিকও!
স্বপ্নের অভিষেক বোধহয় একেই বলে! ৩ ওভারে ২৯ রান দিয়েছিলেন, ছিলেন উইকেটশূন্য। তবে ড্যান ক্রিস্টিয়ানের বদলে তাঁকেই শেষ ওভারে আনলেন ওয়েড।
ওভারের চতুর্থ বলে মাহমুদউল্লাহ হলেন বোল্ড। পরের দুই বলে ক্যাচ দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান। মোস্তাফিজ ধরা পড়েছেন ডিপ মিডউইকেটে, মেহেদী স্কয়ার লেগে। ৩৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বোলিং ফিগার শেষ করলেন এলিস।
১২৭ রানে থামল বাংলাদেশ।
ফিফটি মাহমুদউল্লাহর
ক্যারিয়ারে ৫ম ফিফটি পূর্ণ করলেন মাহমুদউল্লাহ। ৫২ বলে মাইলফলকে গেলেন তিনি। অধিনায়ক হিসেবে এটি প্রথম ফিফটি তাঁর। তবে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে ধীরগতির ফিফটি এটি।
আরেকটি সরাসরি থ্রো, আরেকটি রান-আউট
আফিফ হোসেনের মতো নুরুল হাসানও হলেন রান-আউট! এবং সেটিও আরেকটি সরাসরি থ্রো-তে।
কাভারে ঠেলে সিঙ্গলে কল করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ, তবে শুরুতে সে ডাকে সাড়া দেবেন কিনা- তা নিয়ে যেন নিশ্চিত ছিলেন না নুরুল। এরপর দৌড় শুরু করেছেন, তবে এর আগেই ময়েজেস হেনরিকেসের থ্রো সরাসরি ভেঙেছে স্ট্রাইক-প্রান্তের স্টাম্প।
এর আগে অ্যাডাম জাম্পাকে দারুণ এক শটে ছয় মেরেছিলেন নুরুল, তবে অসময়ে ফিরতে হল তাঁকেও। ৫ বলে ১১ রান করেছেন তিনি।
৪ ওভার বাকী থাকতে বাংলাদেশের স্কোর ৬ উইকেটে ৯৮ রান।
মাহমুদউল্লাহকে রেখে ফিরলেন শামীমও
চাপ বাড়ছিল শামীমের ওপর। হ্যাজলউডের শর্ট বলে তুলে মারতে গিয়ে টাইমিং-ও করতে পারলেন না। মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন তিনি, ৮ বলে ৩ রান করে। মিডউইকেটে পেছন দিকে ছুটে বেশ ভালো ক্যাচ নিয়েছেন বেন ম্যাকডারমট।
ক্যারির দারুণ ফিল্ডিংয়ে ফিরতে হল আফিফকে
আগের ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন, আফিফ এদিন শুরু করলেন সেখান থেকেই। তবে দারুণ ফিল্ডিংয়ে ফিরতে হলো তাঁকে। মিড-অফে ঠেলে সিঙ্গেল নিতে গিয়েছিলেন আফিফ। ডাইভ দিয়ে ধরে ওঠার আগেই ছুঁড়ে মেরেছেন অ্যালেক্স ক্যারি, যে থ্রো-তে সরাসরি ভেঙেছে স্টাম্প। ১২তম ওভারের শেষ বলে ৪র্থ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ, ১৩ বলে ১৯ রান করেই থামলেন আফিফ। ঠিক আগের বলেই মাহমুদউল্লাহর বিপক্ষে একটি রিভিউ নিলেও সফল হয়নি অস্ট্রেলিয়া। ক্রিস্টিয়ানের লেগ কাটার মিস করেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আম্পায়ার গাজী সোহেল দিয়েছিলেন নট-আউটের সিদ্ধান্ত। বল-ট্র্যাকিং দেখিয়েছে, ইমপ্যাক্ট ও উইকেটে ছিল আম্পায়ারস কল।
আফিফ : বুম!
যে শটটা খেললেন, তাতে যেন শুধুই আত্মবিশ্বাস। একটু ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন অ্যাশটন অ্যাগার, আফিফ হোসেন বেরিয়ে এসেছিলেন ক্রিজ ছেড়ে। স্টাম্প থেকে প্রায় তিন মিটার দূরে এসে হাঁটু গেঁড়ে করেছেল স্লগ সুইপ, বল গেছে শেরেবাংলার গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডে। ইনিংসের প্রথম ছয় এল বাংলাদেশের আগের ম্যাচের জয়ের নায়কের ব্যাটেই। অবশ্য সে ওভারে আরেকদফা তুলে মারলেও সফল হননি আফিফ, বল গেছে কাউ কর্নারে, যেখানে ছিলেন না ফিল্ডার।
এক ওভারে তিন চার, পরের ওভারে উইকেট
মাহমুদউল্লাহ টেনে মেরেছেন চার। এরপর সাকিব একটা স্কুপ করে, আরেকটা কাট করে। মিচেল মার্শের করা ৮ম ওভারে উঠেছে ১৫ রান, এখন পর্যন্ত যা ইনিংসে সর্বোচ্চ।
তবে ঠিক পরের ওভারের প্রথম বলেই ফিরেছেন সাকিব। জাম্পাকে তুলে মারতে গিয়ে লং অফে ধরা পড়েছেন তিনি, ১৭ বলে ২৬ রান করে। ৪৭ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
এলিসের শুরুতে শেষ পাওয়ার প্লে
প্রথম বলটা এমনই স্লোয়ার ছিল, সাকিব ক্ষণিকের জন্য যেন থমকেই গেলেন! আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাথান এলিস শুরু করলেন বোলিংয়ের যাত্রা। ৩১ টি-টোয়েন্টিতে ৩৩ উইকেট নেওয়া ২৬ বছর বয়সী নিউ সাউথ ওয়েলস পেসারের শেষ বলে অবশ্য হয়েছে একটা বাউন্ডারি। প্রথম ওভারে তিনি দিয়েছেন ৮ রান। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তুলেছে ২৮ রান।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের ১৫ বছর
২০০৬ সালের ৬ আগস্ট। ১৫ বছর আগে আজকের এই দিনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল সাকিব আল হাসানের।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সাকিব বাংলাদেশের ইতিহাস-সেরা ক্রীড়াবিদ তো বটেই, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে।
Source: Prothomalo