তদন্তে ‘সত্যতা’ পায়নি পুলিশ
সরকার সুজিতকুমার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি সপরিবার রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ২২ ওয়ার্ডের কুমারপাড়া এলাকায় থাকেন। তিনি জিডিতে উল্লেখ করেছিলেন, ইতিমধ্যে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের পক্ষে অবস্থান নিয়ে কিছু অপরিচিত সন্ত্রাসী জীবননাশের হুমকি দিয়েছে। এ ছাড়া জিডির একটি অংশে ‘নাটোর জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ’ গ্রন্থে সাংসদ শফিকুল ইসলামের বাবা হাসান আলী সরদারকে ‘রাজাকার’ বলে উল্লেখ করার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।
ওই বইয়ের উদ্ধৃতি ব্যবহার করে নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ প্রসঙ্গে সাংসদ শফিকুল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, লেখকের বিরুদ্ধে তিনি আইনি ব্যবস্থা নেবেন এবং বইটি টাকা দিয়ে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। সাংসদ তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মর্মে জিডিতে উল্লেখ করে সুজিতকুমার রাষ্ট্রের কাছে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়েছিলেন।
জিডির তদন্ত শেষে নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ প্রথম আলোকে বলেন, ওই শিক্ষকের ফোন ঘেঁটে দেখা গেছে, সেখানে তাঁকে হুমকি দেওয়ার কোনো ফোনকল নেই। ওই সময়ের মধ্যে যাঁরা তাঁকে ফোন করেছেন, তাঁরা তাঁর পরিচিত ব্যক্তি। তাঁরা তাঁকে হুমকি দিয়েছেন এই মর্মে কোনো দাবিও ওই শিক্ষক করেননি। এখন তিনি বলছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর বিভাগের সামনে কয়েকজন যুবক এসে তাঁকে হুমকি দিয়ে গেছেন।
ওসি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাটি বোয়ালিয়া থানার মধ্যে পড়ে না। তিনি যদি আগেই জিডিতে স্থান উল্লেখ করে বলতেন, তাহলে মতিহার থানাকে অন্তর্ভুক্ত করে তদন্ত করা যেত।
যোগাযোগ করা হলে সরকার সুজিতকুমার প্রথম আলোকে বলেন, শুধু তাঁর ফোনের তথ্য যাচাই-বাছাই করেই তদন্ত শেষ করা হয়েছে। অথচ জিডিতে তিনি ফোন থেকে হুমকি দেওয়ার কথা উল্লেখই করেননি।
সুজিতকুমার বলেন, তদন্তের জন্য পুলিশ তাঁর লিখিত জবানবন্দি চেয়েছিল, সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, গত ২৬ জুলাই বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে চার যুবক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলাভবনের সামনে এসে এই মর্মে তাঁকে হুমকি দিয়ে যান, ‘আপনি মিথ্যা তথ্য দিয়ে বই লিখেছেন। আপনাকে এর খেসারত দিতে হবে।’
Source: Prothomalo