প্রার্থীদের অপরাধের তথ্য দলীয় ওয়েবসাইটে দিতে হবে

ভারতে আদালত অবমাননার দায়ে বিজেপি, কংগ্রেসসহ মোট ৯টি রাজনৈতিক দলকে জরিমানা করলেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন, প্রার্থীদের অপরাধের তথ্য দলীয় ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। হাইকোর্টের সম্মতি ছাড়া কোনো বিধায়ক বা সাংসদের বিরুদ্ধে চলা মামলা প্রত্যাহার করা যাবে না। গত বছর বিহার বিধানসভার নির্বাচনের সময় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এই দলগুলো তাদের প্রার্থীদের অপরাধী চরিত্র জনসমক্ষে জানাতে ব্যর্থ হয়েছিল। সেই অপরাধে আজ মঙ্গলবার জরিমানা ধার্য করলেন বিচারপতি আর এফ নরিম্যান ও বিচারপতি বি আর গাভাই।

সবচেয়ে বেশি জরিমানা দিতে হবে সিপিএম ও এনসিপি দলকে। পাঁচ লাখ রুপি করে। এ ছাড়া বিজেপি, কংগ্রেস, জনতা দল, আরজেডি, সিপিআই ও এলজেপিকে জরিমানা দিতে হবে এক লাখ রুপি করে।

এই নির্দেশের পাশাপাশি সর্বোচ্চ আদালত রাজনীতিকে দুর্নীতি ও অপরাধীমুক্ত করতে নতুন করে একগুচ্ছ নির্দেশ জারি করেন। তাতে বলা হয়েছে, কোনো ভোটে কোনো প্রার্থীকে মনোনীত করার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর অপরাধের তথ্য সম্পর্কে যাবতীয় খুঁটিনাটি জনসমক্ষে বাধ্যতামূলকভাবে প্রকাশ করতে হবে। সেসব তথ্য সংবাদপত্র ছাড়াও দলীয় ওয়েবসাইটে দিতে হবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে, যাতে জনতা সবকিছু জানতে পারে।

এই একই নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছিলেন গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিহার বিধানসভার ভোটের আগে। তখন বলা হয়েছিল, প্রার্থী বাছাইয়ের ৪৮ ঘণ্টা অথবা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দুই সপ্তাহ আগে সব তথ্য জানাতে হবে। ৯টি রাজনৈতিক দল সেই নির্দেশ লঙ্ঘন করেছিল। ফলে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়। সেই মামলায় ৪৮ ঘণ্টার নতুন এই নির্দেশ জারির পাশাপাশি জরিমানার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, অপরাধীদের কেন প্রার্থী করা হচ্ছে, জনতাকে সেই জবাবদিহি সব রাজনৈতিক দলকে করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্ট নির্বাচন কমিশনকেও বলেছেন, জনসাধারণের সুবিধার্থে যেন এমন এক মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা হয়, যেখানে সব প্রার্থীর অপরাধযোগের খবর থাকবে। এর ফলে যেকোনো মানুষ যেকোনো প্রার্থীর অপরাধী চরিত্র সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে এক তহবিল গড়ে তুলতে হবে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে। সেই তহবিলে জরিমানার টাকা জমা দিতে বলা হবে।

শুধু এই নির্দেশই নয়, সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার জানিয়েছেন, কোনো দল কোনো রাজ্যে ক্ষমতায় এলে রাজ্যের হাইকোর্টের সম্মতি ছাড়া কোনো বিধায়ক বা সাংসদের বিরুদ্ধে চলা কোনো মামলা প্রত্যাহার করতে পারবে না।

Source: Prothomalo