সেই কণ্ঠশিল্পী রেজাউল করিমের লাশ উদ্ধার

কারও কাছে তিনি মানবেন্দ্র, কারও কাছে তিনি মান্না দে। তবে অভাবের তাড়নায় তিনি রিকশা–ভ্যান চালাতেন। সেই কণ্ঠশিল্পী রেজাউল করিমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় নাটোরের লালপুর উপজেলার কৃষ্ণরামপুর গ্রামের একটি গাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘সুর ছাড়া কিছু নেই তাঁর’ শিরোনামে কণ্ঠশিল্পী রেজাউল করিমকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। প্রতিবেদনে রেজাউল করিমের গাওয়া চারটি গানের ভিডিও ক্লিপ ছিল।

সুর ছাড়া কিছুই নেই তাঁর

সুর ছাড়া কিছুই নেই তাঁর

রেজাউল করিম বাংলাদেশ বেতার রাজশাহীর তালিকাভুক্ত শিল্পী ছিলেন। তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৫৪ বছর। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার দিঘা গ্রামে। অভাবের তাড়নায় ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামকৃষ্ণপুর গ্রামের নিখিল সরকারের মেয়ের বিবাহ অনুষ্ঠানে বাজনা বাজাতে গিয়েছিলেন তিনি। নিখিল সরকারের ভাইয়ের ছেলে মিঠুন সরকার বলেন, আগের দিন থেকে রেজাউল করিম বিয়ের অনুষ্ঠানে মিউজিক করেছেন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তিনি বলেন, তাঁর শরীর খারাপ করছে। তিনি একটু ঘুমাবেন। পরে মিউজিক করার সময় তাঁকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বেলা তিনটার দিকে তাঁদের বাড়ির পাশের আমবাগানের একটি গাছে তাঁর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর রহমান শনিবার রাত সোয়া আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তারপরও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রেজাউল করিমের বাবা যাত্রার নায়ক ছিলেন। বড়ই বিলাসী জীবন যাপন করতেন। কোনো সঞ্চয় ছিল না তাঁর। ১৩ বছর বয়সে বাবার মৃত্যু হলে পথে বসে যান রেজাউল।

ছোট চার ভাই–বোনের হাত ধরে পথে পথে মানুষ হয়েছেন। কিন্তু সুরের সন্ধান যেখানেই পেয়েছেন, ছুটে গেছেন। গলায় তুলে নিয়েছেন। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যাত্রাপালায় শিশুশিল্পীর অভিনয় শুরু করেন। বড় হয়ে অভিনয় ছেড়ে দিয়ে যাত্রায় যন্ত্রসংগীত বাজিয়েছেন।

যাত্রাপালার দুর্দিন পড়ে গেলে রেজাউল করিম রিকশা চালাতে শুরু করেন। তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে।

Source: Prothomalo