গোড়াই-সখিপুর ভাঙা সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই-সখিপুর সড়কের গোড়াই থেকে হাঁটুভাঙা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি ঢাকা, টাঙ্গাইল ছাড়াও গাজীপুর, ময়মনসিংহ জেলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।

ভাঙা সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ ভ্যান, অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ কয়েক হাজার যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে।

মির্জাপুর সড়ক ও জনপথ উপবিভাগ সূত্রে জানা যায়, গোড়াই-সখিপুর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০০৮-০৯ অর্থবছরে সড়কটির উন্নয়ন ও সংস্কারকাজ শুরু হয়।

২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটিতে ধাপে ধাপে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হয়। দীর্ঘ সাত বছর ধরে সড়কটির উন্নয়নকাজ করাতে একদিকে বিভিন্ন স্থানে কাজ চলছিল, অপর দিক যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছিল। ফলে কাজ চলা অবস্থায় সড়কের কিছু অংশ পুনরায় মেরামত করা হয়।

সড়কের ধারণক্ষমতার চেয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় সড়ক বেশি দিন টিকেনি। সড়কে শুকনা মৌসুম ছাড়াও বৃষ্টির মধ্যেও পাথর, মাটি, রড ও কাঠবোঝাই ট্রাক চলাচল করে। এতে ট্রাকের চাকার ঘর্ষণে কিছু এলাকায় কংক্রিটের (ইট, বালু, সিমেন্ট ও রড) ঢালাই করা ইট-পাথর উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

সোমবার সরেজমিনে গোড়াই থেকে হাঁটুভাঙা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটারের মধ্যে বড় বড় গর্ত দেখা যায়। যানবাহন হেলেদুলে চলছে। কংক্রিটের তৈরি সড়ক ভেঙে দেবে গেছে। গোড়াই ও সৈয়দপুর এলাকার বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ২০ থেকে ২০০ ফুট দৈর্ঘ্য পর্যন্ত খানাখন্দে ভরে গেছে। কোনো কোনো স্থানে দুই থেকে তিন ফুট পর্যন্ত গর্ত আছে। সড়কে ইটের টুকরা ফেলে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে।

সৈয়দপুরের ডায়মন্ড মিল এলাকার ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, ভাঙা সড়কের কারণে যানবাহনের গতি একেবারেই কমে যায়। অধিকাংশ সময়ই যানজটের সৃষ্টি হয়। যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। নির্মাণাধীন খলিলুর রহমান টাওয়ার এলাকায়ও রয়েছে বড় বড় গর্ত।

চিতেশ্বরী (সৈয়দপুর পাড়া) এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেন জানান, রাস্তাটির পশ্চিম পাশের জমি আগে নিচু ছিল। এতে বৃষ্টির পানি রাস্তা থেকে বের হয়ে দ্রুত বংশাই নদে নেমে যেত। কিন্তু রাস্তাসংলগ্ন জমিগুলো কয়েক মাস আগে ভরাট করায় পানি রাস্তার ওপর জমে থাকে। ফলে যানবাহনের চাকার ঘর্ষণে রাস্তা দ্রুত ভেঙে গেছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সড়কে চলাচলকারীরা। পানিনিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থার পর সংস্কার করা প্রয়োজন।

ভাঙার কারণে তিন কিলোমিটার সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালাতে হয় বলে জানালেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, অনেক সময় অটোরিকশার চাকা খুলে যায়। এতে তাঁদের আয়ের অনেকটা অংশ ব্যয় হয়ে যায় পরিবহন মেরামতে।

মির্জাপুর সড়ক ও জনপথ উপবিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী এনামুল কবির বলেন, রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৪ বছর আগে সর্বশেষ সংস্কারকাজ হয়। ২০ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন রাস্তাটিতে অনেক সময় ৫০ টন মালবোঝাই যানবাহন চলে। এতে রাস্তাটির অনেক স্থানের কংক্রিটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই তিন কিলোমিটারসহ পুরো রাস্তার ভাঙা অংশ সংস্কার করা হবে। জলাবদ্ধতা সৃষ্ট স্থানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হবে।

এ জন্য ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে সংস্কারকাজ শুরু হবে।

Source: Prothomalo