ঘর-বাড়ি ছাড়া চরফ্যাশনে বিএনপি ১০ হাজার নেতা-কর্মী, উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় পরিবার ”দেখা মিলছেনা অবরোধের কর্মসূচীতে”

ভোলা প্রতিনিধি॥
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী ঘর-বাড়ি ছাড়া। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে ফিরে পুলিশি হয়রানি ও আ’লীগের হামলা থেকে বাঁচতে, মামলা ও হামলার ভয়ে কেউ আর বাড়ি-ঘরে থাকছেন না। আর কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যাচ্ছে না চলমান অবরোধ কর্মসূচিতে।
চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশ যোগ দিতে চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপি, ইউনিয়ন বিএনপি ও বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপির নেতাকর্মীসহ ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, ওলামা দল, জিয়া পরিষদ, কৃষক দল, তাঁতী দল ও মহিলা দলের কয়েক হাজার নেতাকর্মীরা ঢাকায় যান।
ওই মহাসমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশ ও বিএনপি কর্মী নিহত অনেকে আহত হওয়ার জেরে মহাসমাবেশটি পণ্ড হয়ে যায়। এরপর নেতাকর্মীরা এলাকায় আসলে পুলিশি গ্রেপ্তার ও আ’লীগের কর্মী সমর্থকদের হামলা ও মারধরের শিকার হন। এখন তারা পুলিশি গ্রেপ্তার ও আ’লীগের কর্মী সমর্থকদের হামলা থেকে বাচঁতে যে যার মতো করে বাড়ি-ঘর ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছেন। অনেকে আবার ঢাকায় ও বিভিন্ন এলাকায় আত্মীয়স্বজনদের কাছে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
ঢাকার ওই ঘটনার রেশ ধরে গত এক সপ্তাহে চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বাসায়, বাসায় অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে পুলিশ বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের প্রায় ২০ জন নেতাকর্মীকে আটক করে ।
পুলিশের অব্যাহত এমন অভিযানের ও আ’লীগ কর্মী সমর্থকদের হামলার কথা নেতাকর্মীদের মধ্যে জানাজানি হলে তারা পুলিশি হয়রানি ও আ’লীগের হামলা থেকে বাঁচতে, ঘর-বাড়ি ছাড়া হয়ে অন্যত্র নিরাপদে অবস্থান করছেন। এমনকি বিএনপির ডাকা চলমান সড়ক, নৌ ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচিতে কোনো নেতাকর্মীদের মাঠে দেখা যাচ্ছে না। দলীয় কার্যালয়টিও রয়েছে বদ্ধ।
উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার চরমানিকা ইউনিয়ন বিএনপির এক নেতা বলেন, ঢাকার মহাসমাবেশ থেকে ফিরে পুলিশি হয়রানি ও আ’লীগের হামলা থেকে বাঁচতে, মামলা ও হামলা ভয়ে এখন আর বাড়িতে থাকছি না। অন্যত্র অবস্থান করছি, কবে বাড়ি-ঘরে যেতে পারব তাও বলতে পারছি না।
চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা কাউকে অহেতুক হয়রানি করছি না। যাদের বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ রয়েছে তাদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছি তারা বিএনপির কর্মী কিনা তা জানা নেই।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (চরফ্যাশন সার্কেল) মো. মেহেদী হাসান বলেন, পুলিশ কোন দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়। ওয়ারেন্ট ও বিভিন্ন মামলার আসামী গ্রেপ্তারে পুলিশের প্রতিদিনের রুটিন কাজ। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে আটক করছেন।
আ’লীগ নেতাকর্মীদের হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, এমন অভিযোগ কোন থানায় কেউ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও এই কর্মকর্তা জানান।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ