বগুড়ায় অস্থিতিশীল চালের বাজার চাল কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন নির্ণয়ের মানুষেরা

বগুড়া প্রতিনিধি:  : বগুড়ার বাজারে বেড়েছে চালের দাম। সরু বা চিকন চালের দাম না বাড়লেও মোটা ও মাঝারি চালের কেজিতে বেড়েছে তিন থেকে চার টাকা পর্যন্ত। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চালের এই বাড়তি দামের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। ধানের দাম না বাড়লেও দেশের পূর্বাঞ্চলের ১১টি জেলায় আকষ্মিক বন্যার কারণে চালের দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন মিলার, আড়ৎদার ও ব্যবসায়ীরা। আজ সোমবার দুপুরের (২ সেপ্টেম্বর) বগুড়ার ফতেহ আলী বাজারসহ শহরের বিভিন্ন চালের বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, মোটা মানের স্বর্ণা-৫, রঞ্জিত ও হাইব্রিড চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা গত এক সপ্তাহ আগে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকায় বিক্রি হয়। আর মাঝারি মানের বিআর-২৮ ও ২৯ চালের কেজিতে বেড়েছে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত। বিআর-২৮ জাতের চাল আগে ৫৭ থেকে ৫৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বগুড়ার বাজারে সরু বা চিকন চাল-কাটারিভোগ, মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা যায়। ফতেহ আলী বাজারের চাল ব্যবসায়ী অখিল দাশ বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরেই বাজারে মোটা চালের দাম বেড়েছে, পাশাপাশি দাম বেড়েছে মাঝারি মানের চালেরও। বন্যার্ত এলাকায় ত্রাণ হিসেবে মোটা চালের চাহিদা বাড়ার বিপরীতে এ অঞ্চলে সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। আবার মোটা চালের ক্রেতারা বাজারে তাদের চাহিদামত চাল না পেয়ে মাঝারি মানের চালে ঝুঁকে পড়ায় এসব চালের দাম কেজিতে দুই টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বগুড়ার রাবেয়া রাইস মিলসের স্বত্বাধিকারী ইউসুফ আলী বলছেন, মোটা জাতের বিআর-৩৩, স্বর্ণা-৫ ও হাইব্রিড চালের কেজিতে পাইকারিতে এক থেকে দু’টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। এছাড়াও মাঝারি বিআর-২৮ ও ২৯ চালের কেজিতেও একই পরিমাণ দাম বেড়েছে। তিনি জানান, ধানের দাম স্বাভাবিক থাকলেও মূলত দেশের পূর্বাঞ্চলে বন্যার কারণেই চালের বাজার বাড়তি। বগুড়া জেলা চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহ মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বগুড়ার বাজারগুলোতে মোটা চালের সরবরাহ নেই বললেই চলে। সরবরাহ ঘাটতির কারণেই এই মানের চালের দাম বেড়েছে। আর মোটা চালের দাম বাড়ার কিছু প্রভাব পড়েছে মাঝারি চালের বাজারে। এই ধরনের চালের কেজিতেও দুই এক টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বেচাকেনা হচ্ছে। এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, পাইকারিতে দুইএক টাকা দাম বাড়লেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সেই সুযোগে দাম আরও বাড়িয়ে বিক্রি করছেন যা ঠিক নয়। এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, দেশে পর্যাপ্ত চালের যোগান আছে, পাশাপাশি ধানের বাজারও স্থিতিশীল, ফলে বন্যার সংকটকে পুঁজি করে কেউ যাতে চালের বাজার অস্থির করে তুলতে না পারে এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অটো হাসকিং রাইস মিল শেরপুর বগুড়ার সাবেক সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, হাইব্রিড অর্থাৎ মোটা চালের প্রতি কেজিতে এক টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। দেশের চলমান বন্যার কারণে চালের বাজারে সাময়িক এই প্রভাব পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চালের দাম কমে আসবে।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ