১৯ বছর চাকুরি করেও বেতন বঞ্চিত স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের নৈশ্যপ্রহরী বোরহান
আদমদীঘি প্রতিনিধি
২০০৫ সাল থেকে আদমদীঘির সান্তাহারে ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের নৈশ্যপ্রহরী হিসেবে কর্মরত থাকার পরও আজ পর্যন্ত কোনো বেতন পাননি বোরহান উদ্দিন। সান্তাহার রথবাড়ী গ্রামের মৃত আকবর আলীর, ছেলে বোরহান উদ্দিন বিনা বেতনে ২০০৫ সাল থেকে আদমদীঘির সান্তাহারের নবনির্মিত ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের নৈশ্য প্রহরী হিসেবে কর্মরত থাকার পরও আজ পর্যন্ত কোনো বেতন পাননি। অদ্যই ৭ সেপ্টেম্বর রোজ (শনিবার) দুপুর ১২ ঘটিকায় বগুড়া প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে তিনি এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের জানান, গত ২০০৫ সাল হইতে সান্তাহার ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নৈশ্য প্রহরী হিসাবে কর্মরত ছিলেন । হাসপাতালটি নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণে বিলম্ব হওয়ায় হাসপাতালটি সরকারি ভাবে বুঝিয়া নেয় ২০২০ সালে। কিন্তু গত ২০০৫ সাল হইতে ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট ১৫ বছর নৈশ প্রহরী চাকুরির স্থায়ী করবেন বলিয়া বারংবার সকল কর্মকর্তা দিনের পর দিন আশ্বাস প্রদান করেন। তাদের কথা মত এই হাসপাতালের নির্মাণ কাজ থেকে শুরু করে পরবর্তীতে দামি মালামাল পাহাড়া দিয়ে যান তিনি । কিন্তু তারা বেতনভূক্ত বা স্থায়ী করেন না। পরবর্তীতে ২০২০ সালে এসে হাসপাতালটি নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হবার পরে সরকার যখন হাসপাতালের দায়িত্ব বুঝিয়া নিলেন তখন সকল দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়ে ছিলেন এখন থেকে সরকার যেহেতু হাসপাতালটির দায়িত্ব বুঝিয়া নিলেন এবং বোরহান উদ্দিন কে বলেছিলেন এখন থেকে, আপনার পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। কিন্তু দেখা গেল পূর্বের মতই ৪ বছর অতিবাহিত হবার পরেও তারা বিভিন্নভাবে তালাবাহানা করে যাচ্ছে। যেহেতু ২০ টি বছর এই হাসপাতাল পাহাড়ায় তার জীবন যৌবন সবকিছু ব্যায় করেছেন, এমতাবস্থায় তার এই বয়সে অন্য কোন কর্ম করিবার উপায় নাই। সুতরাং তিনি তাদের আশ্বাস মত নানান রকম ঝুঁকি, অভাব, অনটন সমস্ত কিছু সহ্য করিয়া সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও মালামাল পাহাড়া দিয়ে আসছিলেন। এমতাবস্থায় গত ১২ই আগস্ট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিনের কাছ থেকে চিঠির মাধ্যমে হাসপাতালের চাবি বুঝিয়া চায়। বোরহানউদ্দিন ১৪ই আগস্ট আঃ মান্নান ফার্মাসিস্ট এর হাতে চাবি বুঝিয়া দেন। এবং তার ব্যবহারকৃত যাবতীয় জিনিসপত্র সরিয়ানিয়ে যান । বাকি আংশিক জিনিসপত্র তালাবদ্ধ অবস্থায় রাখিয়া আছেন। সংবাদ সম্মেলনে বোরহান উদ্দিন সাংবাদিকদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে গত ১৯ বছরের পারিশ্রমিক না হলেও অন্তত সরকারের ৫ বছরের তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ি মাসিক ১০ হাজার টাকা করে মোট ৬ লক্ষ টাকা আমার পারিশ্রমিক হিসাবে দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, তার এবং তার পরিবারের জীবন রক্ষাথে টাকাটি তার বিশেষ প্রয়োজন । কারন জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার প্রায় ২০টি বছর অত্র হাসপাতাল ও অত্র হাসপাতালের সম্পত্তি পাহাড়া দিয়ে আজ বৃদ্ধ অবস্থায় দাঁড়িয়েছি। এই মূহুতে আমার অন্য কিছু করার বা চাকুরি করার সামর্থ্য, বয়স কোন কিছুই নেই। অত্র হাসপাতালটির সরকার দায়িত্ব নেবার পর থেকে উক্ত হাসপাতালে চাকুরি পাবার আশায় আমি আমার আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নিয়ে আমি ঋণগ্রস্থ হয়ে নিঃস্ব হয়েছি। আমার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। অন্তত তাদের দিক বিবেচনা করে হলেও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা আমার পারিশ্রমিক বুঝিয়া দিয়ে আমার ও আমার পরিবারের জীবন রক্ষা করুন। তিনি আরও বলেন, আমি এসকল চিন্তায় মানসিক ভারসাম্য হারানোর পথে, আমাকে আমার পারিশ্রমিক বুঝিয়া দিয়ে আমাকে চিন্তা মুক্ত করুন। আমাকে ও আমার পরিবারকে বাঁচিয়া থাকার সুযোগ দেওয়া হোক। আমি আমার পারিশ্রমিক যদি না পাই আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের আত্মহত্যা ছাড়া কোন উপায় নাই। আমাদের কিছু হলে এর সকল দায়ভার বর্তমানে যাদের দায়িত্বে আছে তাদের উপর থাকবে।