হোসেনপুরে নাব্যতা সংকটে ব্রহ্মপুত্র এখন পানি শূন্য

এস এম তারেক নেওয়াজ,হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ)

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ নব্যতা সংকটে এখন পানি শূন্য হয়ে মরা খালে পরিনত হয়েছে। ফলে হুমকির মূখে পড়েছে সেচসহ জীব বৈচিত্র। তাই স্থানীয়রা এ নদ খননে আবারও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।
সরেজমিনে গতকাল বুধবার (২১ নভেম্বর) হোসেনপুর-গফরগাঁও সড়কের খুরশিদ মহল সেতু সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে,বিগত ৫০-৬০ বছরেও কোন খনন না করায় নদের তলদেশে পলি জমে এর নাব্যতা হ্রাস পেয়ে এক কালের উত্তাল নদ ছন্দ হারিয়ে আজ মরা খালে পরিনত হয়ে উঠেছে । বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে জীব বৈচিত্রসহ মৎস্য সম্পদ ও নানা জলজ প্রাণী। হাজার হাজার জেলে পরিবার এ পেশা ছেড়ে বেকারত্ব ঘোচাতে বেছে নিয়েছে অন্য পেশা। খেয়া পারের মাঝিরা বৈঠা ছেড়ে কলের নৌকা চলিয়েও শেষাবধি ছাড়তে হয়েছে বাপ-দাদার আদি পেশা। জালের মত ছড়িয়ে থাকা শাখা নদী গুলো এখন বিত্তবানদের ফসলি জমি।এ সময় স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ ও শিক্ষক খোকন মিয়াসহ অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন, কালের উত্তাল ব্রম্মপুত্র নদ আজ স্মৃতীর গহিনে হারিয়ে যাচ্ছে। ভয়াবহ নাব্যতা সস্কট ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় পরিবেশ বিপর্যয়সহ কৃষি আবাদে নেমে এসেছে স্থবিরতা। নদীর তলদেশে পানি না থাকায় সেচ নির্ভর কৃষকরা পড়েছে মহা সংকটে। তাই ব্রহ্মপুত্র নদের দু-পারের মানুষের প্রানের দাবি অতিদ্রুত নদের ড্রেজিং করে পানির প্রবাহ পুর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। সূত্রমতে, নাব্যতা সংকটে হোসেনপুর,গফরগাঁও ও ময়মনসিংহ দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের অস্তিত্ব এখন প্রায় বিলীন। পানির প্রবাহ না থাকায় নদের তলদেশে চলছে চাষাবাদ। এ সুযোগে একটি বিশেষ প্রভাবশালী মহল সিন্ডিকেট তৈরী করে কোটি-কোটি টাকার বালু ও মাটি অবৈধ ভাবে বানিজ্য করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাচ্ছে।ফলে একদিকে সরকার হারাচ্ছে বিরাট অংকের রাজস্ব অন্যদিকে হুমকির মুখে রয়েছে এলাকার ব্রীজ কালভার্ট। শুকনা মৌসুমে পানি কমে গেলে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল দখল নিতে প্রতি মৌসুমেই মারামারিতে প্রাণহানি ঘটে। ফলে ব্রহ্মপুেত্রর খাস জমি ও বালু ব্যাবসার আদিপত্যকে কেন্দ্র করে সামাজিক অসন্তোষ বেড়েইে চলছে। খুরশিদ মহল গ্রামের রিফেল মিয়া,বাবুল মিয়াসহ অনেকেই জানান,নদী ভাঙ্গন রোধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়া নেয়ায় বর্ষা মৌসুমে নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম,বিস্থীর্ণ ফসলী জমি,স্কুল মাদ্রাসা।এ এলাকার মানুষের অভিয়োগ বারবার প্রশাসনের কাছে ধর্ণা দিলেও নেয়া হয়নি কোন সরকারি উদ্যোগ। নাব্যতা সংকটের কারনে শুকনো মৌসুমে সাধারন নৌকাগুলোও চলতে সমস্যায় পড়তে হয়।ফলে নৌযোগাযোগ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ায় ব্যবসা বানিজ্যেতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। প্রাকৃতিক জল বৈচিত্র ধংস হয়ে যাওয়ায় প্রণীকুলের ভারসাম্য হারিয়ে যাচ্ছে। জনশ্রুতি রয়েছে,তৎকালিন বাংলার সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে নৌ বহর নিয়ে হোসেনপুর এলাকা দিয়ে যাতায়ত করতেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নৌ বহর ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে নিয়মিত টহল ও রসদ সরবরাহের নিরাপদ পথ হিসেবে ব্যবহার করত। হোসেনপুর তারা নীলকুঠিও স্থাপন করেছিল।সমৃদ্ধ ইতিহাস আজ কেবল স্মৃতি,নাব্যতা সস্কটে ব্রহ্মপুত্র বিপন্ন। তাই এ এলাকার মানুষের প্রানের দাবী ব্রহ্মপুত্র নদ সরকারী উদ্যেগে ডেজিং করে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা।

editor

Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry. Lorem Ipsum has been the industry's standard dummy text ever since the 1500s, when an unknown printer took a galley of type and scrambled it to make a type specimen book. It has survived not only five centuries