অভিজ্ঞতা ছাড়াই উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগের অভিযোগ
মোঃ মুঞ্জুরুল হক মঞ্জু,
পাকুন্দিয়া প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় একটি মাদ্রাসায় অভিজ্ঞতা ছাড়াই মো. আশিকুল আলম নামের একজন শিক্ষককে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আশিকুল আলম পাশ্ববর্তী মজিতপুর বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী সুপার পদে কর্মরত ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, মাদ্রাসাটির গভর্ণিং বডির সভাপতি মো. আতাউর রহমান সোহেল মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে অবৈধ ভাবে তাকে এ পদে নিয়োগ দিয়েছেন।
সম্প্রতি উপজেলার মির্জাপুর আলিম মাদ্রাসায় এ অনিয়মের ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার গভর্ণিং বডির সদস্য মো. আজহারুল ইসলাম ও মাহবুব হাসান পৃথক ভাবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও মাদ্রাসা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
মাদ্রাসা ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত মির্জাপুর আলিম মাদ্রাসায় বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪শ। মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষের শূন্যপদে নিয়োগের জন্য গত বছরের ১২ ডিসেম্বর নয়াদিগন্ত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তির আলোকে আশিকুল আলমসহ কয়েকজন আগ্রহী প্রার্থী আবেদন করেন। পরবর্তীতে উপাধ্যক্ষ পদের পরীক্ষায় আশিকুল আলমকে উত্তীর্ণ দেখিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। সে আলোকে গত ৫ জুন আশিকুল আলম মির্জাপুর আলিম মাদ্রাসায় উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। এর আগে তিনি মজিতপুর বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় ২০১০ সালের মে মাসে এমপিও ভুক্ত হন। সে অনুযায়ী যোগদানের দিন পর্যন্ত আশিকুল আলমের অভিজ্ঞতার বয়স হয়েছিল ১৩ বছর এক মাস চারদিন।
সূত্র আরও জানায়, সরকারী সর্বশেষ নীতিমালা ২০২০ অনুযায়ী আলিম মাদ্রাসায় উপাধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর দাখিল মাদ্রাসার সুপার অথবা সহকারী সুপার হিসেবে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা এবং দাখিল পর্যায়ে (আরবি বিষয় সমূহে) ১০ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাসহ মোট ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মির্জাপুর আলিম মাদ্রাসায় উপাধ্যক্ষের শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোন নিয়ম মানা হয়নি।
মাদ্রাসার গভর্ণিং বডির সদস্য মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, আলিম মাদ্রাসায় উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেতে প্রার্থীর এমপিও ভুক্তির সময় হতে নিয়োগ পর্যন্ত অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় ১৫ বছর। কিন্তু তার বেলায় তা মানা হয়নি। এ ব্যাপারে এলাকাবাসি প্রতিবাদ করলেও সভাপতি কর্ণপাত করেননি। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার গভর্ণিং বডির সভাপতি আতাউর রহমান সোহেল বলেন, অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিকেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ বোর্ডে আমি একা ছিলাম না। এই বোর্ডে ডিজি সাহেবের প্রতিনিধিসহ অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। তারা যাচাই বাছাই করেই তাকে নিয়োগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুন্নাহার মাকসুদা বলেন, এ বিষয়ে তদন্তের কাজ শেষে হয়েছে। তবে তা এখনও প্রস্তুত হয়নি। কয়েক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।