পাকুন্দিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

মোঃ মুঞ্জুরুল হক মুঞ্জু,

পাকুন্দিয়া  প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. হারুন-অর-রশিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অফিসের বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাত, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ভাতা ভোগীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, একগুয়েমি, স্বেচ্ছাচারিতা, ভাতা ভোগীদের মেঝেতে বসিয়ে রাখাসহ নানা অভিযোগ এনে জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একই অফিসের ১০জন কর্মকর্তা-কর্মচারী।

তাদের অভিযোগ, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হারুর-অর-রশিদ গত বছরের ২৬ ফেব্রæয়ারি এ অফিসে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তার অধস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ভাতা ভোগীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে আসছেন। অফিসের আনুষঙ্গের টাকা উত্তোলন করে মালামাল ক্রয় না করে সেই টাকা আত্মসাত করেন তিনি। অন্য অফিসে বদলী হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীর এনওসি আটকিয়ে রেখে টাকা আদায় করেন। কর্মচারীদের ভ্রমণ ভাতা বিল আটকিয়ে রেখে তিনি নিজে ফিল্ড ভ্রমণ না করেও ভ্রমণ ভাতা উত্তোলন করেন। গ্রামের অসহায়, দরিদ্র প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ভাতা ভোগীদের তার চেম্বারের মেঝেতে বসিয়ে রাখেন। অফিসের মোটরসাইকেল তিনি ব্যবহার না করেও মোটরসাইকেলের জ্বালানী ও মেরামতের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। বিনা কারনে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কর্তন ও বন্ধ করাসহ অহেতুক সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কর্মচারীদের অফিসে বসিয়ে রাখেন।

অফিস সহায়ক মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমার বৃদ্ধা মা অসুস্থ্য থাকায় তার চিকিৎসা করিয়ে অফিসে আসতে আমার একদিন দেরি হয়েছিল। এ জন্য আমার ৯দিনের প্রায় ১০ হাজার টাকা বেতন কেটে দিয়েছেন। আমি গরীব মানুষ। এতে আমার সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়েছে। এছাড়াও অহেতুক তিনি আমাদের হুমকি ধমকি দিয়ে থাকেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, সরকার দারিদ্র বিমোচনের জন্য দরিদ্রদের বিভিন্ন ধরনের ভাতা ও ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু আমাদের উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে সেসব ভাতার টাকা বিতরণ না করে ব্যাংকে ফেলে রেখেছেন। ফলে এসব ভাতা ও ঋণ সুবিধা পাওয়া থেকে এ উপজেলার দরিদ্র মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে আমরা পরামর্শ দিতে গেলে আমাদের প্রতি তিনি রাগান্বিত হন। তার অধিনে আমাদের কাজ করা সম্ভব নয়। তাকে এখান থেকে অন্যত্র বদলী করে নিয়ে যাওয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ অফিসে নানা ধরনের অনিয়ম চলে আসছিল। দালালের মাধ্যমে টাকা নিয়ে বিভিন্ন ভাতার কার্ড করছিল কর্মচারীরা। আমি এ অফিসে যোগদানের পর থেকে এ বিষয়ে কঠোর হওয়ায় এখন তারা আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। তিনি এ বিষয়ে দাপ্তরিক ভাবে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান খান বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। পেলে অফিসের সকলকে নিয়ে বসে বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ