পাট নিয়ে দুঃচিন্তায় খোকসার চাষীরা

ফাহিম শাওন, খোকসা প্রতিনিধি :

পরিশ্রমের ফসল ঘরে তোলা সব চাষীদেরই স্বপ্ন। যদি সেই ফসল নষ্ট বা আশানুরুপ না হয় তাহলে তাদর কষ্টের মাত্রা যেন আরও বেড়ে যায়। আর ঠিক এমনিভাবে পরিশ্রমে ও নানা আশায় বোনা সেই ফসল নিয়ে দুচিন্তায় রয়েছেন খোকসার পাট চাষীরা। আশানুরুপ পাট না হওয়ায় হতাশায় তারা। উৎপাদিত পাট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে তাদের।

খোকসা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি আবাদ মৌসুমে প্রায় ৪০১০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদে লক্ষমাত্রা ধরা হয়। কিন্ত প্রতি বছরের মত এবারও লক্ষা মাত্রা ছাড়িয়ে ৪০৩৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করে কৃষকরা। কৃষি বিভাগ প্রায় ২২৫০ জন কৃষকের মধ্যে সারবীজ সরবরাহ করা হয়। উপজেলায় প্রায় ৫৮,৯০০ বেল পাট উৎপাদনের টার্গেট করা হয়।

এ মৌসূমে বৃষ্টির অভাবে প্রতিটি পাটের জমিতে ৩ থেকে ৪ বার সেচ দিতে হয়েছে। অপর দিকে, প্রচন্ড তাপদাহে পাট আবাদও ভালো হয়নি। ইতোমধ্যে পাট কাটার সময় পার হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে খাল বিলে পানি না থাকায় এখনো ৮০ শতাংশ জমিতে পাট রয়ে গেছে। অনেকের জমিতেই পাটের পাতা ঝড়ে যাচ্ছে। কোথাও আবার পোকার অক্রমন হয়েছে। বেশরি ভাগ জমিতে পাটের মাঝখান থেকে শুকিয়ে লাল হয়ে যাচ্ছে। পাট জাগের (পচানোর) পানির সংকট মোকাবিলায় কৃষি বিভাগের উদ্ভাবিত রিবন রেটিং পদ্ধতির সাথে অধিকাংশ কৃষকের পরিচয় নেই।

খোকসার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে. মাঠের ৮০ শতাংশ পাট এখনও কাটা হয়নি। জনবল ও পানির অভাবে পাট কাটায় ধীর গতি তৈরি হয়েছে।

চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এবারের পাট ভালো হওয়ার প্রধান কারন প্রচন্ড খরা। পানির অভাবে পাটের ফলন ভালো হয়নি। ফলে সেচ দিলেও আশানুরুপ ফল পাননি তারা।

এছাড়াও কয়েকদিনের বৈরি আবহওয়া ও প্রচন্ড বাতাসে পাট গাছের গোড়া নড়ে যায়। ফলে মাঠের অধিকাংশ পাটেই গোড়া-পচন ধরে। ফলে ভালোমত বেড়ে উঠতে পারেনি পাট গাছগুলো। এছাড়াও পাট ভালো ফলনের জন্য সার বা কীটনাশক ব্যবহার সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় ফসল ভালো করতে পারেনি পাট চাষীরা।

অপরদিকে, পাটের ফলন নিয়ে দুচিন্তার সাথে যোগ হয়েছে পর্যাপ্ত পানির অভাব। যে পাটগুলো কাটা হয়েছে সেগুলো জাগ (পঁচন) দেয়ার জন্য পানির অভাব দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়া এছাড়া পুকুর পর্যাপ্ত পুকুর না থাকার কারনে আরও বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের।

বিলে এবার পানি তেমন না থাকায় হিমশিম থেকে হচ্ছে পাটচাষীদের। বেশীরভাগ চষীদের নিজস্ব পুকুর না থাকায় অন্যের পুকুর ভাড়া নিয়ে অথবা পাটের বিনিময়ে পুকুরে পাটের জাগ দিতে হচ্ছে।

বেতবাড়ীয়ার পাটচাষী আবু জাফর বলেন, আমাদের গ্রামে যে পরিমান জলাশয় রয়েছে তাতে মাঠের পুরো পাট জাগ দেয়া সম্ভব নয়। অনেকেই বিলের পানিতে পাট জাগ দিচ্ছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত পানি না থাকায় এবারের জাগটা ভালা হবে না বলে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সবুজ কুমার সাহা জানান, এবারের পাটের আবাদ ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ জমি থেকে পাট কাটা হয়েছে। পানি সংকট মোকাবিলায় তাদের উদ্ভাবিত রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পঁচালে খরচ অনেক কম হবে। প্রতিবিঘা জমিতে ৯ থেকে ১০ মন হারে ফলন হচ্ছে।

editor

Lorem Ipsum is simply dummy text of the printing and typesetting industry. Lorem Ipsum has been the industry's standard dummy text ever since the 1500s, when an unknown printer took a galley of type and scrambled it to make a type specimen book. It has survived not only five centuries