চাচাতো ভাইদের অত্যাচারে বাড়ি ছাড়া মোফাজ্জলের পরিবার

স্টাফ রিপোর্টার: কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার গাগলাইল গ্রামের মো. মানিক মিয়ার ছেলে মোফাজ্জল হোসাইন ও তার পরিবার গত কয়েকদিন ধরে বাড়িছাড়া। চাচাতো ভাইরা জমি সংক্রান্ত জেরে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন তাদের।

এ ঘটনায় গত ১১ মার্চ কিশোরগঞ্জ সদর থানায় তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করার অভিযোগ করা হয় চাচাতো ভাই মো. নূরু মিয়া (৪০), মো. সবুজ মিয়া (৫০) বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মো. নূরু মিয়া গাগলাইল গ্রামের মৃত মতি মিয়ার ছেলে এবং মো. সবুজ মিয়া একই এলাকার মৃত আঃ মজিদ।

এর আগে বড়ই গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে বাদী মোফাজ্জল হোসাইনের স্ত্রীর উপর হামলার ঘটনায় ওই চাচাতো ভাইদের এবং চাচী আনোয়ারা বেগমের (৫৫) বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেন।

কিশোরগঞ্জ সদর থানার অভিযোগে বাদী মো. মানিক মিয়া উল্লেখ করেন, বিবাদীরা অত্যন্ত উচ্ছৃংঙ্খল ও খারাপ প্রকৃতির। তারা আমাকে নিরীহ ও একা পাইয়া আমার উপর অন্যায়ভাবে অত্যাচার নির্যাতন করে আসছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিবাদীদের সাথে আমার ও আমার পরিবারের লোকজনদের বিরোধ চলছে। এসব বিরোধের জেরে বিবাদীরাসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন বিবাদীদেকে নিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারের লোকজনদের খুন জখমের হুমকি দিয়ে আসছিলো। গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় আমি মাঠের বাজার হইতে মাছ বিক্রি করে নিজ বাড়ীর উদ্দেশ্যে আসার পথে আমার নিজ বাড়ীর সামনে রাস্তায় পৌঁছা মাত্রই উল্লেখিত বিবাদীরা এবং অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন বিবাদীদের নিয়া পূর্ববিরোধের জের হিসেবে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বেআইনী জনতাবন্ধে দেশীয় তৈরী অস্ত্র-শস্ত্রে হয়ে আমার গতিরোধ করে আমার উপর অতর্কিতভাবে আক্রমন করে এলোফাতারী মারপিট শুরু করে। এক পর্যায়ে ১নং বিবাদী তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়া আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আমার মাথা লক্ষ্য করে বারি দেয় এবং আমার পিঠে লাগে এবং মারাক্ত জখম হয়। ২নং বিবাদী তার হাতে থাকা কাঠের বর্গা দিয়ে আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে আমার মাথা লক্ষ্য করে বারি দেয়। বারি ডান হাত দিয়ে ফিরাইলে আমার ডান হাতের কব্জিতে লেগে মারাত্বক জখম হয়। এরপর ১নং বিবাদী আমার শার্টের পকেটে থাকা মাছ বিক্রির নগদ ৩০ হাজার নিয়ে যায়। পরে আমি প্রাণ রক্ষার্থে দৌড় দিয়া আমার ঘরে প্রবেশ করলে সকল বিবাদীরা আমার পিছু ধাওয়া করে আমার ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে ঘরের আসবারপত্র ভাংচুর করে। যার ক্ষতির পরিমান প্রায় ২০ হাটার টাকা। একপর্যায়ে ২নং বিবাদী সুকেশের ড্রয়ার থেকে আমার স্ত্রীর ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার যার মূল্য অনুমান ১ লক্ষ ৬০ হাজার নিয়ে যায়। পরে আমি ও আমার বৃদ্ধা পিতা-মাতার ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে বিবাদীরা আমাদেরকে খুন জখমের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে চিকিৎসার জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন।

ভোক্তভোগী মোফাজ্জল হোসেন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, দীর্ঘদিন যাবত তার চাচাত ভাইদের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। গত ৯ মার্চ আমার বড়ই গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে আমার স্ত্রীর উপর হামলার ঘটনায় বিবাদী চাচাতো ভাইগন এবং চাচী আনোয়ারা বেগমের (৫৫) বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। এ কারনে রাগান্বিত হয়ে ১১ মার্চ আমার উপর হামলা চালায় এবং আমার পরিবারকে বাড়িছাড়া করেছে। আমি এসব ঘটনার সুষ্টু বিচার দাবী করি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অভিযোগটি এখনো আমার হাতে পাইনি। হাতে পেলেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।

দৈনিক আমার বাংলাদেশ

দৈনিক আমার বাংলাদেশ