স্বামীর কাছে বদলির রাস্তা খুললো প্রাথমিক শিকদের
ডেস্ক নিউজ
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক বদলি নীতিমালা-২০১৮ জারি করা হয়েছে। এতে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। মফস্বল থেকে ঢাকায় বদলি হওয়ার বন্ধ দরজা খুলে গেছে। আগে স্বামীর নিজ জেলায় নারী শিকরা বদলি হতে পারলেও স্বামীর কর্মস্থল এলাকায় বদলি হতে অনেক জটিলতা পোহাতে হতো, যা ছিল অনেকটা দুঃসাধ্য কাজ। এ পরিবর্তনের ফলে মানবিক কারণসহ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে যে কোনো সময়ে শিকরা বদলির আবেদন করতে পারবেন। ফলে স্বামীর কর্মস্থলের সঙ্গেই থাকতে পারবেন প্রাথমিক স্কুলের নারী শিকরা। তবে স্বামী বা স্ত্রী বেসরকারি চাকরিজীবী হলে এই সুবিধার অন্তর্ভুক্ত হবেন না। প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম আল হোসেন স্বারিত গত ৩০ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক শিক বদলি নির্দেশিকা-২০১৮ জারি করা হয়। তাতে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। নতুন বদলি নীতিমালায় দেখা গেছে, চাকরি পাওয়ার পর নারী শিকদের বিয়ে হলে স্বামীর কর্মস্থলের পার্শ্ববর্তী স্কুলে বদলি হতে পারবেন, প্রতিবন্ধী শিকদের স্থায়ী ঠিকানার পার্শ্ববর্তী এলাকার স্কুলে বদলি করা যাবে। স্বামী মারা গেলে বা বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সুবিধামতো স্থানসহ বিশেষ কোনো কারণে বছরের যে কোনো সময় বদলি হওয়া যাবে। দুর্গম এলাকায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিকরা চাকরির মেয়াদ দুই বছর পর নিজ এলাকায় বদলি হতে পারবেন। এসব বদলির জন্য প্রাথমিক শিা অধিদফতরের মহাপরিচালক, জেলা প্রাথমিক শিা অফিসার ও বিভাগীয় উপ-পরিচালকের সুপারিশ প্রয়োজন হবে। জাতীয়করণ অনেক শিককে ভিন্ন জেলায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তারা প্রেষণে নিজ জেলায় ৫ বছর পর বদলি হতে পারবেন। তবে সাধারণ বদলির েেত্র বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত আবেদনের সময় নির্ধারিত রয়েছে। বলা হয়েছে, শিক বদলির েেত্র সিটি কর্পোরেশন ও উপজেলাকে একক ইউনিট হিসেবে বিবেচনা করা হবে। পৌরসভা সংশ্লিষ্ট উপজেলা এইক ইউনিট হিসেবে বিবেচিত হবে। সহকারী শিক পদে চাকরির মেয়াদ ন্যূনতম ২ বছর পূর্ণ হলে এবং পদ শূন্য থাকলে আন্তঃউপজেলা/থানা, আন্তঃসিটিকর্পোরেশন, আন্তঃজেলা ও আন্তঃবিভাগ বদলি করা যাবে। তবে ওই সময়সীমার মধ্যে একই উপজেলা/থানায় পদ শূন্য হলে বদলি করা হওয়া যাবে। বদলির পর ৩ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত পুনরায় বদলি করা যাবে না। মন্ত্রণালয় কর্মকর্তারা জানান, গত বছর প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকার সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শিক বদলি কার্যক্রম স্থগিত থাকলেও নতুন বদলি নীতিমালায় সেটি বাতিল করা হয়েছে। ফলে এখন থেকে যোগ্য ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে শিকরা ঢাকা মহানগরের যেকোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্য আসনে বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন। বিশেষ কারণে যেকোনো সময়ে বদলি করা হবে। এ েেত্র নিয়োগ প্রদানকারী কর্তৃপ সুপারিশ করলে তাকে বছরের যেকোনো সময়ে বদলি হাতে পারবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, সাধারণ, বৈবাহিক, প্রশাসনিক, সমন্বয়, সংযুক্তি ও বিবিধ বদলির করার কথা বলা হয়েছে। বদলি-সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রতিবছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যান্ত করা হবে। শিকরা নিয়োগের পর বিবাহ বন্ধনে আবন্ধ হলে স্বামী বা স্ত্রী উভয়ের স্থায়ী ঠিকানায় বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এেেত্র বিবাহের কাবিননামা, প্রত্যয়নপত্র, সংশ্লিষ্ট পৌর মেয়র/ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যায়নপত্র, স্বামী/স্ত্রীর স্থায়ী ঠিকানার জমির দলির, খতিয়ান, বাড়ির হোল্ডিং নম্বর (সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য) ও ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোদের রশিদ আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। তবে একই পদে একাধিক আবেদনকারী হলে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে বদলির জন্য বিবেচনা করা হবে। স্বামীর কর্মস্থল, স্থায়ী ঠিকানায় যেখানেই হোক নারী শিকরা সেই স্থানে বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিা মন্ত্রণায়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. গিয়াসউদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক বদলি নীতিমালা জারি করা হয়েছে। এতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষ কারণে যেকোনো সময়ে বদলির জন্য আবেদন করার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। ঢাকা মহানগরে বদলি হওয়ার রাস্তা খুলে দেয়া হয়েছে। জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে শিকদের বদলির জন্য যোগ্য বলে গণ্য করা হবে। তিনি বলেন, অধিকাংশ শিকের ল্য ঢাকা মহানগরের মধ্যে বদলি হওয়া, তাই ২০০ খালি আসনে প্রায় ২০ হাজার আবেদন জমা হয়ে আছে। এ কারণে যোগ্য ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ঢাকায় শিক বদলি করা হবে। এই নির্দেশনা জারির পর পূর্বের জারিকৃত শিক বদলি-সংক্রান্ত নির্দেশি, প্রজ্ঞাপন ও আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে। আগামী জানুয়ারি থেকে বদলি আবেদন গ্রহণ শুরু হবে বলেও তিনি জানান। বদলি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নদী ভাঙন বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে শিকের বসতভিটা বিলীন হলে, প্রশাসনিক প্রয়োজনে, জেলা প্রাথমিক শিা অফিসার তার নিজ অধিেেত্র একই উপজেলায় কোনো বিদ্যালয়ে শ্রেণিকে শিক-শিার্থীর সংখ্যা অনুপাত শিকদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করার প্রয়োজনে উপজেলা শিা অফিসারের সঙ্গে আলোচনা সাপেে বদলি করা যাবে। এসব নির্দেশনা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলার জন্য প্রযোজ্য হবে না। প্রাক-প্রাথমিক শিকসহ প্রধান শিক ও সহকারী শিকরা এই নীতিমালার আওতাভুক্ত হবে। তবে এর আলোকে সংশ্লিষ্ট জেলার উপযোগী নির্দেশিা প্রণয়ন করতে পারবে। এতে আরও বলা হয়েছে, ডিপিই, জেলা প্রাথমিক শিা অফিসার, উপজেলা শিা অফিসার ও সিটি কর্পোরেশনের েেত্র থানা শিা অফিসারদের সুপারিশক্রমে প্রধান শিক ও সহকারী শিকদের বদলি করা হবে।